mobile apptechnology

জুম নাকি গুগল মিট- কোনটি সেরা? Zoom Vs Google Meet

জুম এবং গুগল মিট- কোন ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপ সেরা?

জুম এবং গুগল মিট- দুইটিই অতি পরিচিত ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপ। অফিসিয়াল মিটিং, হোম অফিস, চ্যাটিং, স্ক্রিন ও ফাইল শেয়ার করার জন্য আমরা সবাই এই দুইটি ভিডিও অ্যাপ ব্যবহার করে থাকি। করোনা মহামারীকালীন সময়ে যখন বেশিরভাগই অফিসিয়াল কার্যক্রম হোম অফিসের মাধ্যমে চালাতে হয়েছিল তখন এই দুইটি অ্যাপের ব্যবহার বিশ্বজুড়ে অনেক বৃদ্ধি পায়। এখনো পৃথিবীর যেকোন স্থান থেকেই ব্যবসায়িক মিটিং, অথবা যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে এই দুইটি অ্যাপ ব্যবহারের দিক দিয়ে শীর্ষে রয়েছে। দুইটি অ্যাপই আমাদের কাছে প্রিয় হলেও দুইটি অ্যাপের মধ্যে বেশকিছু পার্থক্য রয়েছে। ইউজারভেদে কোন অ্যাপটি সেরা তা নিয়ে রয়েছে মতপার্থক্য। আমরা আজ দুইটি অ্যাপের পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করব।

জুম মিটিং হল জুম ভিডিও কমিউনিকেশন মালিকানাধীন ভিডিও কনফারেন্সিং সফটওয়্যার প্রোগ্রাম।

জুম অ্যাপ তৈরি হয় অক্টোবর ১২, ২০১১ সালে। এই অ্যাপ Windows, macOS, Linux, Android, iOS, Chrome OS

অপারেটিং সিস্টেম এ ব্যবহার উপযোগী। জুম অ্যাপ ১১ টি ভাষায় ব্যবহার করা যায়। 

Zoom Vs Google Meet

অন্যদিকে, গুগল মিট, গুগলের মালিকানাধীন ভয়েস কনফারেন্সিং অ্যাপ। এই অ্যাপ রিলিজ করা হয় ৯ মার্চ, ২০১৭ সালে। গুগল মিট Android, iOS এবং web অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহার করা যায়। গুগল মিট Google Hangouts এবং Google Duo এর সুবিধা সম্বলিত, অর্থাৎ ওই দুই অ্যাপের রিপ্লেসমেন্ট হিসেবেই গুগল মিট লঞ্চ করা হয়।

মোবাইল অথবা পিসি দুই ডিভাইসেই জুম অ্যাপ ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু গুগল মিট মোবাইলে ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে হলেও ডেস্কটপে ডাউনলোড করার প্রয়োজন হয়না। গুগল একাউন্ট থেকেই মিটিং লিংকে প্রবেশ করে মিটিং এ জয়েন করা যায়৷ তবে জুমেও এখন হোস্ট লিংক শেয়ার করলেই সেই লিংক থেকে মিটিং এ জয়েন রিকয়েস্ট করা যায়।

বেসিক ফ্রি প্ল্যানে গুগল মিট এবং জুমে সর্বোচ্চ ১০০ জন মিটিং এটেন্ড করতে পারবে৷ কিন্তু পেইড প্ল্যানে গুগল মিটে সর্বোচ্চ ২৫০ জন এবং জুমে সর্বোচ্চ ১০০০ জন মিটিং এটেন্ড করতে পারবে।

বড় মিটিং অথবা অনলাইন ক্লাসের জন্য জুম অ্যাপ বেশী সুবিধাজনক।

গুগল মিটের বেসিক ফ্রি একাউন্টে মিটিং টাইম লিমিট থাকেনা। কিন্তু জুম অ্যাপে বেসিক একাউন্টে ৪০ মিনিট সর্বোচ্চ টাইম লিমিট পাবেন। প্রিমিয়াম একাউন্টে মিটিং টাইম লিমিট নেই।

জুম এ মিটিং করতে হলে আইডি লিংক, ও পাসওয়ার্ড প্রয়োজন হয়। কিন্তু গুগল মিটে মিটিং করতে আইডি লিংক ও পাসওয়ার্ড প্রয়োজন হয়না।

গুগল মিট বেসিক প্ল্যান ব্যবহারকারীদের জন্য রয়েছে ফ্রি ১৫ জিবি পর্যন্ত ক্লাউড স্টোরেজ সুবিধা। প্রিমিয়াম প্ল্যান ব্যবহারকারীদের জন্য রয়েছে ৩০ জিবি থেকে আনলিমিটেড স্টোরেজ সুবিধা। কিন্তু জুম বেসিক প্ল্যান ব্যবহারকারীদের জন্য কোন ক্লাউড স্টোরেজ সুবিধা নেই। প্রিমিয়াম প্ল্যান ব্যবহারকারীরা সর্বোচ্চ ১ জিবি ক্লাউড স্টোরেজ সুবিধা পান।

জুমের সকল প্ল্যানেই ব্রেকআউট রুম এবং মিটিং রেকর্ডিং সুবিধা রয়েছে। কিন্তু গুগল মিটে শুধু প্রিমিয়াম প্ল্যানে ব্রেকআউট রুম এবং মিটিং রেকর্ডিং প্ল্যান সুবিধা রয়েছে। জুম এবং গুগল মিটের পেইড প্ল্যান ব্যবহারকারীদের জন্য রয়েছে পোলিং সুবিধা। এছাড়া জুম মিটিং এ কোন ইউজারকে চাইলেই রিমুভ বা মিউট করা যায়, পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করা যায়। কিন্তু গুগল মিটে শুধু ইউজার রিমুভের সুবিধা রয়েছে।

গুগল মিটে রয়েছে ইন্টেলিজেন্ট নয়েজ ক্যান্সেলেশন ফিচার, যাতে করে মিটিং এর সময় বাড়তি শব্দ কমানো যায়। কিন্তু জুমে এই ফিচার পাবেন শুধুমাত্র ডেস্কটপে জুম অ্যাপ ব্যবহারকারীরা।

গুগল মিট এর পেইড প্ল্যান এর প্রাইজ প্রতি মাসে ১৮ ডলার পর্যন্ত। জুম এর পেইড প্ল্যান প্রাইজ প্রতিমাসে ১৯.৯৯ ডলার পর্যন্ত।

গুগল মিট এবং জুম মিটিং এই দুই অ্যাপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সন্তোষজনক। তবে বর্তমানে জুমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশী ভাল। করোনাকালীন সময়ে নিরাপত্তা ইস্যুতে সমালোচনায় পড়তে হয় জুম মিটিং অ্যাপকে। তারপর থেকেই নিরাপত্তা ফিচার বাড়িয়ে দেয় জুম মিটিং অ্যাপ।

প্রতিটি অ্যাপেরই সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে। বৃহৎ পরিসরে ব্যবহারের জন্য জুম সেরা হলেও যেকোন সময় সহজে মিটিং এর জন্য গুগল মিট সুবিধাজনক। তাই ব্যবহারকারীরা নিজেদের সুবিধা মত যেকোন অ্যাপ বেছে নিতে পারেন। অথবা প্রয়োজন মত দুইটি অ্যাপই ব্যবহার করতে পারেন।

কন্টেন্ট রাইটার – সাবিহা সাইদ খান (প্রিয়জানালা)

Back to top button