moviestop 10

সেরা হিট বলিউড মুভি – সেরা ১০ হিন্দি মুভির বাংলা রিভিউ

বলিউড উজ্জ্বল হয়েছে বিশ্ব চলচ্চিত্রের আঙিনায় । বিশ্বের সবচেয়ে বড় সিনেমার বাজারও বলা হয় ভারতীয় সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিকে । দীর্ঘদিনের ইতিহাসে এখানে মুক্তি পেয়েছে শত শত কালজয়ী সিনেমা । সেগুলো দর্শক মাতিয়েছে বক্স অফিস । বরং দেখে নেয়া যাক ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়া তালিকায় বলিউডের বক্স অফিস কাঁপানো সেরা ১০ চলচ্চিত্রের তালিকা ।

সেরা হিট বলিউড মুভি - সেরা ১০ হিন্দি মুভির বাংলা রিভিউ

দঙ্গল ( Dangal )

এই সিনেমাটি ভারতীয় চলচ্চিত্র ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আয়কারী সিনেমা এবং চীনে সবচেয়ে বেশি আয়কারী ২০ টি সিনেমার ভিতরে অন্যতম । নিতেশ তিওয়ারী পরিচালিত হিন্দী ভাষার জীবনীবিষয়ক ক্রীড়াকেন্দ্রিক চলচ্চিত্র এটি । ২০১৬ সালে মুভিটি মুক্তি পায় । প্রাক্তন ভারতীয় কুস্তিগীর মহাবীর ফোগট পুত্রসন্তানের কামনায় দিন কাটাচ্ছিলেন । কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল তাঁর ছেলেই ভারতের জন্য কুস্তিতে আন্তর্জাতিক স্তরে সোনা জিতে আনতে পারবে । কিন্তু চারবার কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন তার স্ত্রী । একদিন পাড়ার দুটি ছেলে পিছনে লেগেছিল বলে তাঁর দুই মেয়ে গীতা এবং ববিতা তাদের ধোলাই করেছিল । এরপরই শুরু হলো নতুন লড়াই । এরপরই সমাজের প্রথা ভেঙে মেয়েদের কুস্তিতে লড়াইয়ের জন্য তৈরি করতে থাকে বাবা মহাবীর ।

বজরঙ্গি ভাইজান ( Bajrangi Bhaijaan )

মুভিটি পরিচালনা করেছেন কবির খান এবং গল্পের লেখক ছিলেন বিজয়েন্দ্র প্রসাদ । ২০১৫ সালে বজরঙ্গি ভাইজান মুক্তি পায় । সিনেমা শুরু হয়েছে ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ দিয়ে । একজন গর্ভবতী মহিলা পাকিস্তানের সুলতানপুর গ্রাম বসে ঠিক করছেন , তাঁর সন্তানের নাম রাখবেন ” শাহিদা ” । ছ’বছর এগিয়ে গল্প চলতে শুরু করে । শাহিদাকে নিয়ে তার মা দিল্লি আসছেন মেয়ের সুস্থ জীবনের জন্য । কারণ শাহিদা কথা বলতে পারে না । সেখান থেকে পাকিস্তান ফিরে যাওয়ার পথে ট্রেনটি ধরতে পারেনি ছোট্ট শাহিদা । অসহায় শাহিদার এরপর দেখা হয় পবনকুমার চতুর্বেদীর সঙ্গে । যেহেতু শাহিদা কথা বলতে পারে না , সেহেতু সলমন নানাভাবে বাচ্চাটির বাড়ির ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন । সেই সময়ই সলমন তাঁর নিজের জীবনের গল্প বলতে শুরু করেন শাহিদাকে । এরপরই শাহিদাকে ভালোভাবে পাকিস্তানে তার বাড়িতে পৌঁছে দিতে যায় পবনকুমার ।

পিকে ( PK )

পিকে মুভিটি পরিচালনা করেছেন রাজকুমার হিরানি । এত সুন্দর একটা গল্পের লেখক ছিলেন রাজকুমার হিরানি ও অভিজিৎ জোসী । ২০১৪ সালে পিকে মুভিটি মুক্তি পায় । ছবির কাহিনীতে বেলজিয়ামের সাংবাদিকতার ছাত্রী জগ্গু । পড়াশোনা শেষ করার পর সে ঠিক করে ভারতে নিজের বাড়িতেই ফিরে যাবে সে । আর সেখানেই তার সঙ্গে দেখা হয় পিকে একটি অদ্ভুদ ছেলের সঙ্গে । পিকে বাকি সবার থেকে আলাদা । আর তাই তার মাথায় অদ্ভুদ অদ্ভুদ সব প্রশ্ন জন্ম নেয় । আর সেই প্রশ্নগুলো জগ্গুকেও নাড়া দেয় । আর সেই কৌতুহল নিরসনেই একটি যাত্রা শুরু করে পিকে ও জগ্গু । এই যাত্রা ঘিরেই গল্প এগোতে থাকে ।

পদ্মাবত ( Padmaavat )

মুভিটি পরিচালনা করেছেন সঞ্জয় লীলা বানসালি এবং গল্পের লেখক ছিলেন প্রকাশ কাপাডিয়া ও সঞ্জয় লীলা বানসালি । ২০১৮ সালে পদ্মাবত মুভিটি মুক্তি পায় । ছবিতে দেখানো হয়েছে , শিকারে বেরিয়ে ভুল বশত রাজা রতন সিং কে আঘাত করে ফেলেন পদ্মিনী । তারপর থেকেই এক অপরের প্রেমে ঘনিষ্ঠ হতে থাকেন । সুদুর বেলাভূমিতে যখন এরককম প্রেম প্রস্ফুটিত হচ্ছে , তখন রাজধানী দিল্লিতে চড়ছে আলাউদ্দিন খিলজির স্পর্ধা । তুতো বোন মেহেরুন্নিসাকে বিয়ে করে কাকা জালালউদ্দিনকে হত্যার পর দিল্লির তখতে খিলজি অধিষ্ঠিত হন । এরই মধ্যে , দিল্লির সম্রাট খিলজির কাছে হাজির হয়ে এক পণ্ডিত । যিনি পদ্মিনীর রূপের গুণগান খিলজির কাছে করেন । এরপরই পদ্মিনীকে কেড়ে নিতে আক্রমণের ছক কষেন এই তুর্কী আফগান সম্রাট আলাউদ্দিন খিলজি । খিলজি শেষ পর্যন্ত কী করতে পারলেন পদ্মিনীকে নিয়ে তা জানতে হলে অবশ্যই আপনাকে মুভিটি দেখতে হবে ।

সাঞ্জু ( Sanju )

মুভিটি বানিয়েছেন আরিয়ান হৃদয় । পরিচালনা করেছেন রাজকুমার হিরানী এবং গল্পের লেখক ছিলেন অভিরুচি চন্ড । ২০১৮ সালে সাঞ্জু মুক্তি পায় । সাঞ্জু বলিউডের ব্যাড বয় সঞ্জয় দত্তের গল্প । ছবিটি দেখে মনে হতে পারে সাইকেডেলিক জীবন কোনও মস্তিষ্কহীন ব্যক্তির তৈরি স্ক্রিপ্ট । দর্শকের সামনে তুলে ধরেছেন শিশুসুলভ একটা সত্ত্বাকে , যিনি ত্রুটিহীন নন , সবসময় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন । যখন সনজু তাঁর বম্বে ব্লাস্টের সঙ্গে যোগাযোগ , অন্ধকার জগতকে চেনা নিয়ে বিন্দুমাত্র কৌশলী না হয়ে নিজের সমস্ত চারিত্রিক সত্যতা প্রকাশ করতে পিছপা হননি , তখন সেটা চিত্রায়িত করা ভুল নয় । যেকোন কেউ চোখের নিমেষে হাসতে হাসতে কাজগুলো করতে পারে না । সে কী করছেন সেটা হয়তো পরিস্থিতির গুরুত্ব না বুঝেই । তিনি বন্দুক রেখেছেন নিজের বাড়িতে , কিন্তু শুধুমাত্র নিজের পরিবারকে নিরাপদ রাখতে । তিনি সমাজের চোখে দুষ্কর্ম করেছেন , জেলে গিয়েছেন , জেলের বাতাসহীন শক্ত মেঝের ঘরে উপচে পড়া টয়লেটের মধ্যে থাকার নরকযন্ত্রনা ভোগ করেছেন । এসব নিয়েই তৈরি হয়েছে সঞ্জয় দত্তের চলচ্চিত্র ” সাঞ্জু ” ।

কিক ( Kick )

কিক মুভিটি পরিচালনা করেছেন সাজিদ নদিয়াদওয়ালা । গল্পের লেখক ছিলেন রজত অরোরা । ২০১৪ সালে কিক মুক্তি পায় । ছবি শুরু হয় , সাইনা যে একজন মনোবিদ । তাঁর হবু স্বামী হিমাংশুর সঙ্গে ট্রেন সফর দিয়ে । দুজনের মধ্যে কেউই বিয়ের পক্ষপাতি নন । কিন্তু একে অপরকে চেনার পর খুব ভাল বন্ধুত্ব হয়ে যায় দুঝনের মধ্যে । বন্ধুত্ব হওয়ার পরই সাইনা নিজের অতীতের কথা হিমাংশুকে জানিয়ে দেবে বলে ঠিক করে । মূলত তার প্রাক্তন প্রেমিক ডেভিল এর বিষয় জানাতে চায় হিমাংশুকে । এর পরেই ফ্ল্যাশব্যাকে চলে যায় ছবি । দেখানো হয় ডেভিল ও সাইনার গল্প । তারপর হিমাংশুও একটি গল্প বলে সাইনাকে । হিমাংশু পুলিশ অফিসার । কীভাবে তিনি বুদ্ধিদীপ্ত চোরের সন্ধান পান সেই গল্পই সাইনাকে শোনায় হিমাংশু । এদিকে হিমাংশু বা সাইনা কেউই জানে না যে তারা দুজনেই ডেভিলের বিষয়েই আলোচনা করছেন । এর পরে ছবি আবার বর্তমানে ফিরে আসে । কীভাবে পুরো চিত্রটাই আবার পাল্টে যায় । কীভাবে একজন সাধারণ ব্যক্তি ডেভিলে পরিণত হয় তা নিয়েই এগিয়ে চলে ছবি ।

আশিকি ২ ( Aashiqui 2 )

আশিকি ২ মুভিটি পরিচালনা করেছেন মোহিত সুরি এবং গল্পের লেখক ছিলেন শাগুফতা রফিক । ২০১৩ সালে মুভিটি মুক্তি পায় । রাহুল একজন গায়ক , যিনি তার মদ্যপানের অভ্যাসের কারণে তার ক্যারিয়ার হারান । তিনি একদিন অরোহির দেখা পান , যেখানে মেয়েটি জীবিকা নির্বাহের জন্য গান গায় । তার গানে মুগ্ধ হয়ে , তাকে মুম্বাইয়ে নিয়ে যাওয়ার এবং তারকা বানানোর প্রতিশ্রুতি দেন । যেখানে তারা একে অপরের প্রেমে পড়ে । অরোহিকে তারকা বানানোর পর , রাহুল মনে করেন সে তার জীবনে একটি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং তাকে ছেড়ে দেওয়াই তাকে বাঁচানোর একমাত্র বিকল্প ।

সিক্রেট সুপারস্টার ( Secret Superstar )

মুভিটি পরিচালনা করেছেন অদ্বৈত চন্দন । ২০১৭ সালে সিক্রেট সুপারস্টার মুক্তি পায় । মাত্র ৬ বছর বয়সেই মায়ের প্রেরণায় তার গীটার বাজানোর হাতেখড়ি হয় । সে যখন বড় হতে থাকে তার ধ্যান জ্ঞ্যানে থাকে শুধু সংগীত । বোর্ড পরীক্ষা সামনে থাকার পরেও ইন্সিয়া তার প্রতিভাকে পৃথিবীর সবাইকে দেখাতে চায় । তার নিচু ও বদমেজাজি বাবার কারণে কোন কম্পিটেশনে সে অংশ নিতে পারে না । তার একমাত্র প্রেরণা তার মা , যিনি তার মেয়েকে সর্বোচ্চ স্বাধীনতা দেয়ার চেস্টা করেন । তিনি তার বিয়ের মালা বেচে তার মেয়েকে ল্যাপ্টপ কিনে দেন । এর মধ্যে ইউটিউব চিনে ফেলে ইন্সিয়া যাকে সে তার প্রতিভা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে কাজে লাগায় । বাবার ভয়ে নিজের নাম পরিচয় গোপন রেখে ইউটিউবে বোরকার আড়ালে নিজের গাওয়া গান ছাড়ে । ভাইরাল হয়ে যায় সেই ভিডিও গুলো আর এতেই ঘুরে যায় তার জীবনের মোড় ।

বাজীরাও মস্তানী ( Bajirao Mastani )

সঞ্জয় লীলা ভন্সালী পরিচালিত ২০১৫ সালের চলচ্চিত্র । ” রাউ ” উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এই চলচ্চিত্রে পেশওয়া বাজিরাও এবং তার দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রেমের গল্প তুলে ধরা হয়েছে । ১৭২০ থেকে ১৭৪০ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত মারাঠার সেনাপতি ছিলেন বাজিরাও । তাঁর জীবনের ৪১টি যুদ্ধে কখনও তাঁকে পরাজিত করা যায়নি । মারাঠা সেনাপতি বাজিরাও এক বার বুন্দেলখণ্ড রাজ্যকে মুঘল আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করেন । আর এই সূত্রেই বাজিরাও বল্লালের সঙ্গে পরিচয় হয় রাজকুমারী মস্তানীর । আর পরিচয় থেকেই প্রেম । এই মস্তানি বাজিরাওয়ের দ্বিতীয় পত্নী । যদিও মাস্তানিকে মারাঠা সেনাপতির পরিবার তাঁকে কখনো বাজিরাওয়ের স্ত্রী হিসেবে মেনে নেয়নি । কারণ মাস্তানি মুসলিম পরিবারের মেয়ে । ধর্ম , সামাজিক ও পারিবারিক চক্রান্তের বাধা পেরিয়ে বাজিরাও-মস্তানির প্রেম বাঁচিয়ে রাখার লড়াই ফুটে উঠেছে এই ছবিতে । যার উল্লেখ ইতিহাসেও রয়েছে ।

কবীর সিং ( Kabir Sing )

মুভিটি পরিচালনা করেন সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা । ২০১৯ সালে মুভিটি মুক্তি পায় । ছবির গল্প নিতান্তই সাদামাটা । বদরাগী কবীরের প্রেমে পড়া আর সেই প্রেমকে পাওয়ার গল্প দেখানো হয়েছে গোটা ছবিতে । প্রেমিকাকে অন্য কেউ ছুঁলে সে সহ্য করতে পারে না । একসময় প্রীতি বিহনে কবীর বদলে যায় । অ্যালকোহল , ড্রাগ আর সিগারেটের মধ্যে নিজের জগৎ খুঁজে নেয় । সিনেমা দেখতে দেখতে আবেগ-অনুভূতি সবারই আসবে ।

আরো পড়ুন- 

গত দশকের বাংলাদেশের সেরা ১০ সিনেমার রিভিউ – বাংলা সিনেমা রিভিউ

     প্রিয়জানালা’র প্রিয় পাঠকঃ বাংলা ব্লগ, তথ্য ও প্রযুক্তি, সাধারণ জ্ঞান, বিজ্ঞান, খেলাধুলা, পড়াশুনা, বিউটি টিপস, স্বাস্থ্য টিপস, সিনেমা রিভিউ,  চাকরির গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলোর আপডেট পেতে এবং মতামত প্রকাশের জন্য আমাদের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ প্রিয়জানালা এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন। 

Back to top button