bangla moviemoviesUncategorizedweb series

কারাগার পার্ট ২ রিভিউ – প্রত্যাশা কতটুকু পূরন হল? Karagar 2

Karagar Part 02 Review

কারাগার পার্ট ২ রিভিউ – দর্শকের আকাশ ছোয়া প্রত্যাশা কতটুকু পূরন হল?

দেশীয় ওয়েব সিরিজে ১৯ আগস্ট তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করার পর “কারাগার পার্ট ২” এর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন দেশের দর্শকসহ অভিনেতা, সমালোচক এমনকি পাশের দেশের দর্শকরাও। কারাগার ওয়েব সিরিজ দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও দেশীয় ওয়েব সিরিজের দূর্দান্ত এক ইমেজ তৈরিতে সক্ষম হয়েছে। সেই হিসেবে সবার প্রত্যাশা ছিল সীমাহীন। চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত এবং সৈয়দ আহমেদ শাওকী পরিচালিত বহুল প্রতিক্ষীত ওয়েব সিরিজ “কারাগার পার্ট ২” ২২ ডিসেম্বর রাত ১২ টায় ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম Hoichoi এ রিলিজ হয়। চলতি বছর ১৮ ই আগস্ট রাত ১২ টায় রিলিজ হয়েছিল কারাগার পার্ট ১। কারাগার দর্শকদের মতে দেশের শ্রেষ্ঠ ওয়েব সিরিজ। রিলিজের পর দেশ বিদেশের দর্শক এবং অভিনেতারা “কারাগারকে” মাস্টারপিস বলে উল্লেখ করেন। কারাগার ওয়েব সিরিজটির শুরুতেই জানানো হয়েছিল যে ওয়েব সিরিজটির পার্ট ২ আসবে। দর্শকদের মতে পার্ট ১ এ যেসব প্রশ্নগুলো থেকে গিয়েছিল সেগুলোর উত্তর পার্ট ২ এ দেওয়া হয়েছে। অনেক সময় দেখা যায় ওয়েব সিরিজগুলোর পার্ট ১ ভালো হলেও পার্ট টু তে এসে হতাশ হন দর্শক। কিন্তু কারাগার পার্ট ২ এর বেলায় এমনটি ঘটে নি। প্রথম পার্ট এর চেয়েও বেশি থ্রিলিং ছিল পার্ট ২। প্রথম পার্ট এ চঞ্চল চৌধুরী ছিলেন ১৪৫ নং সেলের বোবা এবং বধির কয়েদি। সে দাবি করেছিল সে ২৫০ বছর ধরে বেঁচে আছে। একটা মানুষ কিভাবে ২৫০ বছর বাচে? ২৫০ বছর আগের মানুষ কিভাবে আধুনিক সাইন ল্যাংগুয়েজে কথা বলে? শেষ দৃশ্যে দেখা গিয়েছিল চঞ্চল বোবা নন। তাহলে চঞ্চল কে? কিভাবে সে ৫০ বছর বন্ধ থাকা সেলে আসল? এর উত্তর পাওয়া যাবে পার্ট ২ এ। কারাগার পার্ট ২ এর মেকিং, কাহিনী বর্ননা, রহস্যের সমাধান সর্বোপরি মেকিং, বিজিএম, কালার গ্রেডিং, সিনেমাটোগ্রাফি সবকিছুই আগের পর্বের মতই অসাধারণ ছিল। মেকিং নিয়ে অভিযোগের জায়গা রাখেন নি পরিচালক। কারাগার পার্ট ২ এ বাড়তি আকর্ষন ছিল প্রতিশোধ এবং আবেগের সংমিশ্রন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙালি কি কি হারিয়েছে তা আবার নতুনভাবে কারাগার ২ এ দেখতে পাবেন দর্শকরা। কাহিনীর বিন্যাসে অনেক প্রশ্নের উত্তর পাবেন কারাগার পার্ট ২ এ। কিছু গালি-গালাজ ও রয়েছে, যা কয়েদিদের স্বাভাবিক চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছে।

কারাগার ওয়েব সিরিজ- পার্ট ০১ রিভিউ

কারাগার পার্ট ২ এ চঞ্চল চৌধুরী আগের বারের মতই দূর্দান্ত অভিনয় করেছেন। তাসনিয়া ফারিন আগের পর্বের মতই এবারের পর্বেও ভালো অভিনয় করেছেন। আফজাল হোসেনের জল্লাদ চরিত্র এবং চঞ্চলের বন্ধুর ছেলে ভাতিজা চরিত্রে রাজুর অভিনয় ছিল মন কেড়ে নেওয়ার মত। রাজু পর্দায় এক নতুন ইমেজ ফুটিয়ে তুলেছে যা ছিল খুবই উপভোগ্য। সেই সাথে জেলার ইন্তেখাব দিনার, এফ এস নাইম, শতাব্দী ওয়াদুদ, তানভীন সুইটি সবাই যার যার জায়গায় নিজেদের অভিনয় দক্ষতা ফুটিয়ে তুলেছেন। অভিনয়ের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই কারণ সবাই নিজের অভিনয় ১০০% ফুটিয়ে তুলেছেন। তবে কারাগার পার্ট -১ এ যেসব চরিত্রগুলো বেশী গুরুত্ব পেয়েছিল পার্ট ২ এ তাদের অনেকের চরিত্র তেমন গুরুত্ব পায়নি। আবার পার্ট ২ এ কিছু চরিত্র আলো ছড়িয়েছে এবং দূর্দান্ত অভিনয় করেছে।

 

যদিও সব প্রশ্নের উত্তরই যে দর্শক পছন্দ করবেন এমনটা নয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, কিছু মানুষের অস্তিত্ব সংকট, ১৯৭১ এ এদেশের মা-বোনদের সীমাহীন দূর্দশার চিত্র এখানে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হলেও যথেষ্ঠ আবেগ ফুটিয়ে তুলতে পারেন নি সৈয়দ আহমেদ শাওকী। এর কারন কাহিনী খুব জলদি এগিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং সকল সাবপ্লটের ব্যাখ্যা ঠিকমত দেওয়া হয়নি। কিছু রহস্যের ব্যাখা গোজামিল ও মনে হতে পারে৷ স্ক্রিন প্লে কিছুটা স্লো ছিল। তবে প্রতিশোধ এবং আবেগের সংমিশ্রন ছিল একেবারে পারফেক্ট। তবে অনেক দর্শকই বলেছেন দ্বিতীয় পার্ট আরও থ্রিলিং হতে পারত। কারাগার পার্ট-২ এর জন্য সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছিলেন। কারাগার পার্ট ১ এ থ্রিল তৈরি করা হয়েছে এবং পার্ট ২ এ সেই থ্রিলার কাহিনীর জট ছাড়ানো হয়েছে। সব মিলিয়ে দেশীয় ওয়েব সিরিজে আরেকটি রেকর্ড সৃষ্টি করেছে কারাগার পার্ট ২। চঞ্চল চৌধুরীর অভিনয়, তার নীরব চোখের ভাষা ভারতীয় দর্শক এবং অভিনেতাদেরও মন কেড়ে নিয়েছে। দর্শকদের কিছু অভিযোগ থাকলেও কারাগার পার্ট – ২ মাস্ট ওয়াচ একটি ওয়েব সিরিজ। কারাগার পার্ট -২ দেশীয় ওয়েব সিরিজের জগতে আরেকটি মাইল ফলক হয়ে থাকবে।

Back to top button