healthtips

মেয়েদের ওজন কমানোর উপায় – ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট

মেয়েদের ওজন কমানোর অর্গানিক খাদ্যে তালিকা ও নিয়মিত ব্যায়াম

আজ আমরা মেয়েদের স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলবো । মহিলাদের বা মেয়েদের ওজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যা কিভাবে ঠিক করা যায় সেই বিষয়ে আমরা একটু আলোচনা করবো । আলোচনা করবো ওজন কমানোর খাবার নিয়ে ।

মেয়েদের ওজন কমানোর উপায় - ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট
how to lose belly fat fast- Image Credit- Rashida Malik

১ মাসে ১০ কেজি ওজন কমানো অসম্ভব কিছু নয় । কঠোর ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রমের মাধ্যেমে এটা করা যায় । আপনার মন এবং দেহ যদি পুরোপুরি অসম্মতি দেয় তাহলে চেষ্টা না করাই ভাল । কেননা শুধু ৭-৮ দিন কষ্ট করার কোন মানে হয় না । আপনি আজ শুরু করলে আজ থেকেই ওজন কমা শুরু করবে না । আপনার শরীরের এই খাদ্য তালিকা গ্রহণ ও মস্তিষ্ক ওজন কমানোর জন্য প্রস্তুত হলে , এটা কাজ করা শুরু করবে । শরীর ও মনকে এমন পর্যায়ে নিতে সময় লাগবে । সারাদিনের ক্যালরি গ্রহণ ও খরচের উপর নির্ভর করে দিনে আপনার গ্রাম কমবে । এখানে আরো কিছু ব্যাপার আছে , শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বেশি হলে প্রথমে ধীরে ধীরে ওজন কমতে থাকবে । 

তবে আমার কঠোর নির্দেশ না খেয়ে থাকবেন না । আর আপনার যদি শারীরিক কোন সমস্যা থাকে বা যদি আপনি কোন ডাক্তারের নির্দেশনায় থাকেন , তাহলে এটা অনুসরণ করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেবেন ।

এই ওজন কমানোর খাদ্য তালিকার সাথে সম্পূর্ণ ফলাফল পেতে ব্যায়ামও করতে হবে । ওজন কমানোর ব্যায়ামগুলো জানতে হবে । মধু আর লেবুর উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে । ওজন কমাতে সকালের নাস্তা , সকালের নাস্তা রেসিপি । দুপুরের খাবার তালিকা , বিকেলের হালকা খাবার , রাতের খাবার কেমন হওয়া উচিত এই বিষয়ে ধারণা থাকতে হবে । জল খাওয়ার নিয়ম ও সতর্কতা ।

চলুন দেখে নেই ওজন কমানোর খাবার তালিকা ।

সকাল মানেই ৯-১০ টা নয় । সকাল ৬ টায় উঠতে হবে । সকালের আবহাওয়ায় কিছু স্বাস্থ্যকর উপাদান থাকে । যেমন সকালের রোদে ভিটামিন ডি শরীরের জন্য অনেক উপকারি ।

সকালে ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে এক গ্লাস মধু দিয়ে লেবু পানি পান করতে হবে । একটা মাঝারি সাইজের লেবুর অর্ধেক রস এক গ্লাস জলের মধ্যে দেবেন । সাথে এক চামচ অর্গানিক মধু মিশিয়ে পান করবেন । শীতকালে কুসুম গরম জল দিয়ে পান করবেন ।

সকালে উঠেই খালি পেটে ৪০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা জগিং করবেন ফিরে এসে পানীয় খাবেন এবং এর সাথে আধা চামচ কালো জিরার তেল মিশিয়ে খেতে পারলে আরো ভাল ।

সকালের নাস্তা মানে ৮ টার দিকে একটি আপেল/কমলা অথবা দুইটি ছোট সাইজের কলা খেতে পারেন । সপ্তাহে চার দিন এসব খাবেন । বাকি দুই দিন একটা পাতলা রুটি অথবা চিনি ছাড়া বাকড়খানি খাবেন সাথে একটি কলা দিয়ে । বাকি একদিন একটি ডিম অথবা একগ্লাস দুধ চিনি ছাড়া । যেদিন দুধ ডিম খাবেন সাথে একটি কাঁচা শসা অথবা গাঁজর খেয়ে নিবেন ।


সকালের নাস্তা পর ১০.৩০ টায় অল্প তেলে রান্না করা নানা পদ মেশানো শাক সবজি ( Mixed Vegetables ) বড় কাপের ১ কাপ পরিমাণ খাবেন । সপ্তাহে দুই দিন ছোট এক বাটি ডাল খাবেন । বেশি ক্ষুদা লাগলে সবজি বা ডালের সাথে অল্প কিছু মুড়ি মিশিয়ে খেতে পারেন । অথবা ৩-৪ টেবিল চামচ ওটমিল ভেজানো কিছমিছ বা খেজুর খেতে পারেন । রাতের ঘুমানোর আগে ২-৩ টা খেজুর এবং ২০-২৫ টা কিছমিছ ভিজিয়ে রাখবেন ।

দুপুরে ২ টার সময় মাঝারি সাইজের বাটির এক বাটি শাক-সবজির সাথে ডাল মিশিয়ে খাবেন । মিক্সড সবজি খাওয়া সবচেয়ে ভাল । তাহলে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল পাচ্ছেন । আর সবজিতে থাকে প্রচুর ফাইবার যা হজমে সহায়তা করে এবং শরীরে প্রবেশ করার সাথে সাথে গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয় । সবজি রান্না করার ক্ষেত্রে তেল খুব সামান্য দেবেন । আর তেলে পেয়াজ ভেজে রান্না করবেন না । সবজি পুরোপুরি সিদ্ধ করবেন না আধা সিদ্ধ সবজিতে পুষ্টিগুণ অটুট থাকে ।

শাক সবজির মধ্যে বাঁধাকপি , ফুলকপি , টমেটো , গাঁজর , শসা , বেগুন , মূলা , পটল , করলা , লাউ , মিষ্টি কুমড়া , পালং শাক , পুঁই শাক , মূলা শাক , লাউ শাক , ইত্যাদি ওজন কমানোর জন্য অনেক উপকারি । অধিক ক্ষুদা লাগলে সপ্তাহে দুইদিন ১ কাপ করে ভাত খাওয়া যাবে । তবে ১৫-২০ দিন পর পর ভাত খেলে বেশি ভালো । সপ্তাহে ১-২ দিন মুরগির মাংস খেতে হবে । তবে শুধুমাত্র মুরগির বুকের মাংস ( Chicken Breast )।

আপনাদের রাতের খাবার এবং ঘুমাতে যাওয়ার সময় এর মধ্যে যদি লম্বা বিরতি থাকে আপনাকে এই অভ্যাসটি পরিহার করতে হবে ।

দুশ্চিন্তা না করে বরং কীভাবে ওজন কমানো যায় সেই চেষ্টাই করুন । মিষ্টি জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকুন । মিষ্টি জাতীয় খাবারগুলো শরীর ইন্সুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় । ইন্সুলিন হল শরীরে চর্বি সংরক্ষণ করার প্রধান হরমোন । দিনের প্রতিবার খাবারে প্রোটিন , ফ্যাট এবং অল্প কার্বোহাইড্রেড যুক্ত সবজি রাখুন । এগুলো আপনাকে সুস্থ , সবল রাখার পাশাপাশি ওজন কমাতে সাহায্য করবে ভুলেও না খেয়ে থাকবেন না । ডায়েট মানেই অনেকেই মনে করেন না খেলেই বোধ হয় ওজন কমে যাবে এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা । না খেয়ে থাকলে ওজন কমবে না বরং অসুস্থ হয়ে যাবেন । তাই দিনে ৩-৪ বার খেতে হবে । তবে পেটা ভরে খাওয়া যাবে না । আর পরিমাণ মতো পানি খেতে হবে ।

ঘুম মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ কাজ । এটা শরীর , মন এবং অনুভূতিকে প্রভাবিত করে । সারাদিনে খাওয়া খাবারের পুষ্টিগুণগুলো ঘুমের মধ্যে দেহের প্রয়োজনীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে গিয়ে তাদের কর্মক্ষম করে । তাই একজন পূর্ণবয়স্ক নারীর দিনে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত । ঘুম কম হলে শরীর খারাপ হয় , মন খারাপ থাকে , মাথাব্যাথা হতে পারে , কাজে অনিচ্ছা জাগে , নানা দুশ্চিন্তা এসে ভর করে । এগুলো মেয়েদের ওজন কমানোর জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ।

ব্যায়াম করতে হবে । ঘরে বসে বা আশেপাশে খোলা মাঠেও ব্যায়াম করতে পারেন । বাইরে হাঁটতে যেতে পারেন এবং ঘরে স্কিপিং করতে পারেন । নিয়মিত এগুলো করলেই ওজন কমতে বাধ্য । তবে মনে রাখবেন প্রতিদিন ব্যায়াম করবেন না । প্রাথমিক অবস্থায় একদিন পরপর করবেন । এতে ভালো ফল পাবেন । প্রথম এক থেকে দুদিন করার পর দেখবেন পেটে মাংসপেশিতে ব্যথা অনুভব করবেন । এতে আপনি নিশ্চিত হবেন যে আপনার ব্যায়াম গুলো কাজে লাগছে । এভাবে দুই থেকে তিন মাস টানা করলে ভালো ফল পাবেন । এবং দুই থেকে তিন মাস পরে আবার অন্য ব্যায়াম নির্বাচন করতে হবে । কারণ একই ব্যায়াম বেশি দিন ধরে করতে থাকলে আর কাজে দিতে চায় না । সবশেষে মনে রাখতে হবে যে ব্যায়ামের পাশাপাশি খাবারের দিকে অবশ্যই নজর দিতে হবে ।

মেয়েদের ওজন কামানোর উপায়গুলোর মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণে ঘুম , পরিমিত খাওয়া , সবসময় হাসি খুশি থাকা , শরীরের যত্ন নেয়া এবং কিছু ব্যায়াম করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ । অতিরিক্ত মুটিয়ে যাওয়া মেয়েদের সমস্যার শেষ নেই । শারীরিক , মানসিক , পারিবারিক এমনি বন্ধুদের মধ্যেও সে হাসির পাত্র এবং বৈষম্যের শিকার । আর আমাদের দেশে এটা আরো ভয়াবহরূপে দেখা দেয় । মেয়েদের নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয় । শেষ কথা বলতে একটাই কথা বলবো ওপরের টিপস গুলো , ব্যায়াম গুলো বা ডায়েট এর টিপস গুলো একটু ভালো করে মেনে চলবেন ।

মনে রাখতে হবে ডায়েটের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তার বা বিশেষজ্ঞের কাছে পরামর্শ নিতে হবে। নিজ থেকে কখনওই কোনো কিছু করা উচিৎ না যা সম্পর্কে আমাদের ধারণা কম।

 প্রিয়জানালা স্বাস্থ্য টিপস 

Hepatitis B হেপাটাইটিস -বি কী? যেভাবে ছড়ায়? লক্ষনসমুহ ও তাঁর প্রতিকার

বয়ঃসন্ধিকালঃ কিশোর কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন ও করনীয়

 পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতে ১৫টি খাবার – বীর্য ঘন করার ঘরোয়া উপায়

সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।   আপনার মতামত আমাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ, তাই কমেন্ট এর মাধ্যমে আপনার মতামত জানান। ধন্যবাদ।

     প্রিয়জানালা’র প্রিয় পাঠকঃ বাংলা ব্লগ, তথ্য ও প্রযুক্তি, সাধারণ জ্ঞান, বিজ্ঞান, খেলাধুলা, পড়াশুনা, বিউটি টিপস, স্বাস্থ্য টিপস, সিনেমা রিভিউ,  চাকরির গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলোর আপডেট পেতে এবং মতামত প্রকাশের জন্য আমাদের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ প্রিয়জানালা এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন। 

Back to top button