bangla blogbanking tipstips

ক্রেডিট কার্ড কি? ক্রেডিট কার্ডের আবেদন ও সুবিধা-অসুবিধা

ক্রেডিট কার্ড কি? কিভাবে ক্রেডিট কার্ডের জন্য এপ্লাই করতে হয়? জেনে নিন বিস্তারিত!

ক্রেডিট কার্ড মানেই আনলিমিটেড শপিং, কেনাকাটা করার সুবিধা, এমনটাই ধারণা অনেকের। কিন্তু ক্রেডিট কার্ড আসলে কি? এটা আমরা অনেকেই জানি না।

ক্রেডিট কার্ড কি? ক্রেডিট কার্ডের আবেদন ও সুবিধা-অসুবিধা

ক্রেডিট কার্ড কি?

ক্রেডিট কার্ড হলো মূলত একটি চিপ-ভিত্তিক প্লাস্টিকের কার্ড (সাধারণত), এতে ক্রেডিট কার্ডধারীর নাম, ক্রেডিট কার্ড নাম্বার, মেয়াদ শেষ এর তারিখ, সিভিভি, ক্রেডিট কার্ডধারীর স্বাক্ষর এবং কাস্টমার কেয়ার সেন্টারের বিবরণ, ইত্যাদি তথ্য দেওয়া থাকে। ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করা হয় মূলত গ্রাহকের পক্ষে অগ্রিম ব্যয় সুবিধা নিশ্চিত করতে। মনে করুন আপনার একাউন্টে ১ লাখ টাকা আছে। আপনি কার্ডের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা খরচ করলেন। এখন ব্যাংক কিন্তু আপনার কারেন্ট বা সেভিংস একাউন্ট থেকে ২০ হাজার টাকা কেটে নেবে না, বরং এটা বিল হিসেবে ধরা হবে যা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিল পরিশোধ করলে বাড়তি কোন ইন্টারেস্ট প্রদান করতে হয়না। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বকেয়া বিল পরিশোধ না করলে নির্দিষ্ট হারে ব্যাংক অথবা ক্রেডিট কার্ড ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠানকে ইন্টারেস্ট প্রদান করতে হয়। 

ক্রেডিট কার্ড কি ক্রেডিট কার্ডের আবেদন ও সুবিধা অসুবিধা
ক্রেডিট কার্ড

ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা

কারা ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন – এটা  অনেকেই জানেন না। বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার প্রক্রিয়া বেশ সহজ। কিছু যোগ্যতা থাকলে ক্রেডিট কার্ডের জন্য এপ্লাই করা যায়। যেকোন পেশাজীবি বিশেষত চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী বা অন্য পেশাজীবী, যাদের আয় ও বৈধ কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) আছে, শুধুমাত্র তারাই ক্রেডিট কার্ড এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। ব্যাংক বা আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রেডিট কার্ড পেতে হলে তাদের ক্রেডিট কার্ড বিভাগের প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করতে হবে। এরপর গ্রাহকের আয়ের উৎস, মাসিক আয়, ইত্যাদি তথ্য জমা দেওয়ার পর ক্রেডিট কার্ড বিভাগ থেকে গ্রাহককে পরবর্তী ধাপে করণীয়  সম্পর্কে জানানো হবে। 

 Credit Card নিবেন? Credit Card এর সুবিধা ও অসুবিধা জানেন? ভিডিও দেখুন 👇

ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য যেসব ডকুমেন্ট এবং যোগ্যতা প্রয়োজন তা হলোঃ-

✅ জাতীয় পরিচয় পত্র

টিআইএন সার্টিফিকেট

চাকরিজীবির ক্ষেত্রে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার বা স্যালারি সার্টিফিকেট এবং ৩ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট

ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স, Memorandum of Association ৩ মাসের ব্যাংক ট্রানজেকশন স্টেটমেন্ট

এগুলো আপনার আয়ের উৎসের নির্ভরযোগ্যতা এবং আপনার স্বচ্ছলতা প্রমাণ করবে। বিভিন্ন পেশাজীবি ব্যক্তি যাদের কোন ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট আছে তারা ব্যাংকের অনুমতি সাপেক্ষে ব্যাংকে ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। ক্রেডিট কার্ডের ক্রেডিট লিমিট কত হবে তা আবেদনকারীর দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে ব্যাংক বা কার্ড সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সিদ্ধান্ত নেবে। কারণ সকলের আয়ের উৎস, পরিমাণ সমান নয়।

ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা-অসুবিধা

প্রতিটি জিনিসেরই সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে। ক্রেডিট কার্ডও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে অসুবিধার চেয়ে সুবিধার পরিমাণই বেশী, যদি সঠিকভাবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা যায়।

ক্রেডিট কার্ড এর কিছু উল্লেখযোগ্য সুবিধা হলোঃ-

যেকোন সময় কিছু কেনার ক্ষেত্রে টাকার জন্য কোন সমস্যায় পড়তে হয়না। যদিও কার্ডের লিমিট থাকে।

ডেবিট কার্ড বা চেক ব্যবহারের চেয়ে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা নিরাপদ। কারণ পেমেন্ট গেটওয়ে বা মার্চেন্টের সেবায় কোনো সমস্যা ধরা পড়লে ক্রেডিট কার্ডে সহজেই রিফান্ড রিকোয়েস্ট করা যায়।

ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধে সুদের হার থাকে খুবই কম, অনেক সময় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোন সুদই প্রদান করতে হয়না।

ক্রেডিট কার্ড এর ক্ষেত্রে অনেক কম সুদেই, অনেকসময় শূন্য শতাংশ সুদেও ঝণ পাওয়া যায়।

ক্রেডিট কার্ড এর মাধ্যমে বিল পেমেন্ট এর ক্ষেত্রে বিভিন্ন অফার থাকে, যা থেকে আয় করা সম্ভব।

কার্ড ব্যবহারে বেশী খরচ করে ফেলছেন বা সমস্যা মনে হলে থাকছে কার্ড এর ধরন পরিবর্তনের সুযোগ।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটা ও সময়মত বিল প্রদান করলে ক্রেডিট কার্ড হোল্ডারের ব্যাংক থেকে CIB রেকর্ড বাড়ানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করবে।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটা করলে অনেক ক্ষেত্রে রিওয়ার্ড পয়েন্টও পাওয়া যায়, যা থেকে পরবর্তীতে নতুন কিছু কেনা যায়।

ক্রেডিট কার্ডের অসুবিধা

প্রতিটি জিনিসেরই ভাল এবং খারাপ দুইটি দিক থাকে। ক্রেডিট কার্ডেরও রয়েছে। খারাপ দিকগুলো হচ্ছে-

ঋণের পরিমাণ বেড়ে যায়, অপ্রয়োজনে জিনিস কেনার অভ্যাস হয়ে যায়।।

অনেক সময় ইন্টারেস্টের অর্থ পরিশোধ কষ্টসাধ্য হয়ে যায়।

অনেক সময় প্রতারকদের খপ্পরে পড়তে হয়।

ক্রেডিট কার্ডের কিছু লুকায়িত ব্যয়ের কারণে ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

সঞ্চয়ের প্রবণতা হ্রাস পায়।

অন্যের মুখাপেক্ষী না হয়ে এবং সেভিংস ঠিক রাখতে ক্রেডিট কার্ডের জুড়ি নেই। শুধুমাত্র অধিক খরচের প্রবণতা এড়াতে পারলে ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকের জন্য অবশ্যই সুবিধাজনক। আশা করি ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত তথ্যগুলো আপনাদের উপকারে আসবে। এ ধরনের আরও পোষ্ট পেতে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। 

ক্রেডিট কার্ড কি? ক্রেডিট কার্ডের আবেদন ও সুবিধা-অসুবিধা 

প্রিয়জানালা’র সর্বশেষ আপডেট পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন 

আরো পড়ুন- 

অনলাইনে আয় করার সহজ উপায় – কন্টেন্ট রাইটিং কি?  

ঢাকা সিটির ১০টি দর্শনীয় স্থান – ছুটির দিনে কোথায় যাবেন?

কন্টেন্ট রাইটার – সাবিহা সাইদ খান (প্রিয়জানালা)

     প্রিয়জানালা’র প্রিয় পাঠকঃ বাংলা ব্লগ, তথ্য ও প্রযুক্তি, সাধারণ জ্ঞান, বিজ্ঞান, খেলাধুলা, পড়াশুনা, বিউটি টিপস, স্বাস্থ্য টিপস, সিনেমা রিভিউ,  চাকরির গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলোর আপডেট পেতে এবং মতামত প্রকাশের জন্য আমাদের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ প্রিয়জানালা এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন। 

Back to top button