হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ফেইসবুক ও ইউটিউব থেকে সংগ্রহ করে তুলে ধরা হলো
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ০১
রিভিউ লিখেছেন- Tanvir Ahmed Rahat
হাওয়া
এই দেশে আমার দেখা সেরা একটা সিনেমা
নেই কোনো একশন সিন , নেই কোনো মসলা কনটেন্ট ,
শুধু মাত্র এর গল্প এবং অভিনয় আপনার মন জয় করে নেবে …
আর মুভির কালার গ্রেডিং , সিনেমাটোগ্রাফি তো একদম আগুন ছিল
মিউজিক এর ব্যাপারে তো আপনারা জানেন ই… ইউটিউব এই যে পরিমাণ সাকসেস পেয়েছে , হলে তো দারুন লাগবেই ….
পার্সোনাল রেটিং ৮.৫/১০
১ পয়েন্ট কাটবো ভয়েস ওভার কিছু কিছু জায়গায় একটু লো কোয়ালিটি লাগাই ,
আর ০.৫ পয়েন্ট কাটবো কিছু কিছু সীনের দৈর্ঘ্য একটু বেশি বড়ো করে ফেলায় যা দরকার ছিলনা …
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ০৩
রিভিউ লিখেছেন- সিনেগল্প – Cinegolpo
দুর্দান্ত! মেজবাউর রহমান সুমনকে টুপিখোলা অভিবাদন!
এ হাওয়া ছড়িয়ে পড়ুক সবখানে!
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ০৩
রিভিউ লিখেছেন- Az Atikur Rahman
“হাওয়া”
Worth The Hype????
এখানে একটা বিশাল বড় প্রশ্নের সৃষ্টি করে “হাওয়া”। কিন্তু এই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে উতরে যেতে পারবে কি না সেটা দর্শকরা ভালো জানেন। তবে আমার মতো দর্শক যারা আছেন তাঁরা প্রায় সার্বক্ষণিক স্ক্রিণে হা করে তাঁকিয়ে ছিল মুগ্ধতায়। সিনেমার সিনেমেটোগ্রাফার’কে আলাদা ভাবে ধন্যবাদ, এত সুন্দর ভিজ্যুয়াল, এত সুন্দর ক্যামেরার এঙ্গেল ফুটিয়ে তোলার জন্যে। স্ক্রিনপ্লে কিছুটা মন্থর প্রথম হাফ এ, কিন্তু গতিশীল হতে বেশি সময় নেয়নি। সিনেমার ডিরেকশন দেখে বোঝার উপায় নেই এটি “মেজবাউর সুমন” এর প্রথম বড় পর্দার ডিরেকশন। এখানে তিনি যথাযথ নিজের ক্যাপাবিলিটি প্রমাণ করেছেন।
অভিনয় প্রসংগে আসলে “চান মাঝী” র ক্যারেক্টার এ “চঞ্চল” দানবীয় কাজ দেখিয়েছেন। আমার মনে হয়না তাঁকে নিয়ে আলাদা ভাবে কথা বলার দরকার আছে। কিন্তু আমি যাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখিয়েছি সেই “নাসিরউদ্দিন খান(নাগু)” আরো একবার সজরে বল বাউন্ডারি তে মেরেছেন। এই লোকটা আমাদের ইন্ড্রাস্ট্রির পিউর জেম, একদম যেন পানির মতন যেখানে রাখবেন সেখানেই নানান রূপ ধরবে। “ইব্রাহীম” চরিত্রে “শরিফুল রাজ” খুবই ভালো ছিলেন, “সোহেল মন্ডল, সুমন আনোয়ার আরো যারা সহশিল্পী ছিলেন প্রত্যেকে সিনেমার প্রাণ হিসেবে কাজ করেছেন। তবে Last but not the least “গুলতী” চরিত্রে নাজিফা তুষী অনবদ্য
লুকস, চাহনী সবকিছু দিয়ে আঁকড়ে ধরে রেখেছিল যখন যখন পর্দায় এসেছে। সব কিছু মিলে বাংলা ইন্ড্রাস্ট্রি তে আরোও একটি দারুণ কাজ। এই ফিল্মের জন্য মানুষ যেই উন্মাদনা দেখালো তা সামনে ভালো কিছুরই ইঙ্গিত দেয়।
তবে এটা অবশ্যই মাথায় রেখে যেতে হবে “হাওয়া” আর ৫ টা সিনেমার মতন আপনাকে বানিজ্যিক অনুভূতি দিবেনা কিন্তু যা পাবেন তা সবই “RAW”.
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ০৪
রিভিউ লিখেছেন- Habibur Rahman Khan Arif
“এই দরিয়ায় কত্তো কাহিনী হয়
কিন্তু তুই তো জ্যান্ত মাইয়া মানুষ”
দেখে নিলাম এ বছরের তুমুল হাইপ তোলা সিনেমা ‘হাওয়া’। এই সিনেমা শেষ করে বেশ পজিটিভ একটা মাইন্ড নিয়ে হল থেকে বের হয়েছি। বাকিদের কেমন লেগেছে সেটা বোঝার জন্য সিনেমা শেষে সকলের সম্মিলিত হাততালি এবং হল থেকে বের হয়ে মানুষের মুখে মুখে ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গানটা শুনতে পাওয়াই যথেষ্ট। তাহলে শুরু করা যাক…….
প্রথমে স্পয়লার না দিয়ে কাহিনীটা ছোট করে বলি। একদল জেলে সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে সমুদ্র থেকে একটা মেয়েকে উদ্ধার করে। মেয়েটা বোটে আসার পর অন্যরকম সব ঘটনা ঘটতে থাকে। এই মেয়েটা আসলে কে??? এই বোটে আসাটা কি নিতান্তই কাকতালীয়??? এর পেছনে কি অন্য কোনো গল্প আছে!!!
সিনেমার প্রথম হাফ মুটামুটি ভালো। সেকেন্ড হাফ বেশ এনগেজিং। বিশেষ করে ক্লাইমেক্স তো মারাত্মক লেভেলের ভালো ছিলো।
সিনেমায় অভিনয় করা সবাই বাঘা বাঘা অভিনেতা। প্রথমেই বলতে হয় চঞ্চল চৌধুরীর কথা। এই লোককে দিয়ে যেকোনো চরিত্র করানো যাবে। ওনাকে এতো পারফেক্ট লাগছিলো যে কি বলবো! এই ইন্ডাস্ট্রিকে অনেক কিছু দেওয়ার আছে ওনার। তারপর বলবো নাজিফা তুষির কথা। বাপ্রে, মনে হচ্ছিলো চোখ দিয়েই ঘায়েল করে ফেলবে! এক্সপ্রেশনগুলো এত্তো ভালো ছিল যে একটা সময় এই চরিত্রটাকে ভয় লাগা শুরু করবে। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে যেনো চঞ্চল চৌধুরীকেও ছাড়িয়ে গেছেন উনি। ‘আইসক্রীম’র পর ওনার ঝুলিতে আরও একটা ভালো প্রাপ্তি যুক্ত হলো। শরিফুল রাজ ভালো। নাসির উদ্দিন খান তো পুরাই জোশ। উনি স্ক্রিনে আসলেই মানুষ বিনোদন পায়। ওনার চরিত্রটা খুবই ভালো ছিল। সুমন আনোয়ারকে ‘নবাব এলএলবি’তে খুব একটা ভালো লাগেনি। কিন্তু এখানে উনি অভিযোগ করার জায়গা রাখেননি। সোহেল মন্ডল বেশ ভালো। মাহমুদ আলম নিজের জায়গায় ভালো।রিজভী রিজু ভালো। বিশেষ করে রিজভী রিজুর লাস্ট দৃশ্যটুকু খুবই ভালো ছিল।
এই সিনেমার কারিগরি দিকেই টপ ক্লাস কাজ হয়েছে। সিনেমাটোগ্রাফি দুর্দান্ত। কালার গ্রেডিং খুবই ভালো। পানিতে নেওয়া শটগুলো বেশ স্পষ্ট। এই সিনেমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো হলে বসা দর্শকদের একসাথে ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গান গাওয়াটা। এছাড়াও বিজিএম বেশ ভালো ছিলো।
এতোসব প্রাপ্তির পরও কিছু জিনিস ভালো লাগেনি। সিনেমার প্রথম দিকে সংলাপের সাউন্ডের তুলনায় অন্যান্য সাউন্ড হাই ছিল, বৃষ্টির সিনের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। এটা সিনেমা হলের সমস্যা কিনা জানিনা। শরিফুল রাজের অভিনয় ভালো। তবে কেন জানিনা ‘আরও একটু ভালো হতে পারতো’ মনে হচ্ছে। ট্রেলার দেখেও আন্দাজ করা যায় যে নাজিফা তুষির ক্যারেক্টারটা রহস্যময়, কিন্তু তবুও এই চরিত্রটা আরও একটু বিল্ড আপ করা উচিত ছিল।
সবমিলিয়ে এই ছিল আমার দৃষ্টিতে ‘হাওয়া’। সবশেষে একটা কথাই বলবো- সিনেমা হলে যান, ‘হাওয়া’ খেয়ে আসুন। কারণ এরকম সিনেমাটিক অভিজ্ঞতা সচরাচর পাওয়া যায়না
এক্সপেকটেশন বেশি নিয়ে গিয়েছিলাম।অফট্র্যাকের একটা মুভি মোটামোটি দেখে হতাশ হবেন না।
তবে পরাণ যেমন সার্বজনীন মুভি ছিল হাওয়া তেমন না একটা স্পেসিফিক দর্শকের জন্য হাওয়া।আমার কাছে মূল থিমটা খুব এ্যাভারেজ লেগেছে।অনেক গালি আছে মুভিতে ফ্যামিলি নিয়ে না যাওয়ার জন্য বলবো।বন্ধুদের সাথে ঠিক আছে।
সেই ২০০৯ সালে চঞ্চল চৌধুরীর প্রথম ছবি রিলিজ হয়েছিল “মনপুরা” সাভার চন্দ্রিমা হলে গিয়ে দেখেছিলাম । তাও দুই সাপ্তাহ ঘুরে টিকিট পাইনি, তৃতীয় সাপ্তাহে ব্ল্যাকারের কাছ থেকে তিনগুণ টাকা বেশি দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করি।
সেটাই ছিল আমার জীবনের সর্বশেষ সিনেমাহলে ছবি দেখার এক ইতিহাস।
কারণ, কাজের তাগিদ আর ব্যস্ততায় সিনেমাহলে ছবি দেখার পুনরাবৃত্তি হয়নি।
আর বিশেষ করে এখন ইউটিউব, ওয়েবসাইট থেকে হিন্দি ছবিই দেখা হয় বেশি, আর বাংলা নাটক।
এখন ২০২২ এসে “হাওয়া” সিনেমার প্রচারণায় মনে হচ্ছে সেই ১৩ বছর পূর্বেই ফিরে যাচ্ছি।
আমি এখন প্রবাসে, দেশে থাকলে বউ বাচ্চাকাচ্চা সপরিবারে হলে চলে যেতাম।
প্রবাসে থেকেও যখন দেখি বাংলা ফিল্ম ইণ্ডাষ্ট্রির উন্নতি হচ্ছে, বাংলার মানুষ আবারও হলমূখী হচ্ছে অনুভূতিটাই অন্য রকম।
ফিল্মে কাজ করতে হলে, বডি বিল্ডার, সুদর্শন চেহারা, আইটেম সং, বড় এমাউন্টের বাজেট, কিংবা বলিউড হলিউডকে ফলো করতে হবে বিষয়টা এমন না। অভিনয়ের জন্য দরকার যেমন গল্প তেমন এক্সপ্রেশন।
চঞ্চল চৌধুরী তার জলন্ত প্রমাণ, এই মানুষটার অভিনয়ে এক্সট্রা বিশেষত্ব আছে। খুব সহজেই যে কোন গল্পে নিজেকে মিলিয়ে নেয়। এই লম্বা ফিল্ম ক্যারিয়ারে তিনি বহু কাজ করেছেন ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে ও ক্যারেক্টার। আর শরিফুল রাজ আমাদের ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার গর্ব, তার “পরাণ” ইতিমধ্যে বাজিমাত করেছে, আশাকরি ‘হাওয়া’ সিনেমাটিও আলোড়ন সৃষ্টি করবে। আমার বিশ্বাস বাংলা ফিল্ম ইণ্ডাষ্ট্রি ধরে রাখতে এমন দুই একজন আর্টিস্ট -ই যথেষ্ট এবং ভালো গল্প।
একটা গান ইউটিউব কাঁপিয়ে দিচ্ছে, কি মাদক মেশানো লিরিক্স গানে “সাদা সাদা- কালা কালা” গল্পের সাথে গানের আউটস্ট্যান্ডিং কম্বিনেশন। এটাই আমাদের সংস্কৃতি আর চলচ্চিত্র এমনি হওয়া উচিত।
বলিউডের অপসংস্কৃতি মেয়েদের দেহ দেখিয়ে আইটেম গান বানানো, সেখান থেকে বেরিয়ে এমন একটা আধুনিক বদ্যযন্ত্র বিহীন গান খালি গলায় এমন সুরেলা কণ্ঠ সত্যি প্রাণ জুড়িয়ে যায়।
গানটা নিঃসন্দেহে পুরষ্কার ডিজার্ভ করে।
জয় হোক বাংলা চলচ্চিত্রের।
স্ক্রিপ্ট রাইটার, লাইট, ক্যামেরা, মেকাপ, আর্টিস্ট সহ সকল কলাকৌশলীদের জন্য শুভকামনা রইল ।
হ্যাপি ওয়াচিং
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ০৭
রিভিউ লিখেছেন- Imran Ahmed Saudagar
Congratulations
to the whole team for such an amazing movie experience!
From direction, cinematography, screenplay, acting, casting, costume, music, color, art direction, editing, production & promotion, its a treat to our eyes!
রুদ্ধশ্বাস একটা মুভি। বাংলাদেশে এমন মুভি হতে পারে তা কেউ কখনো কল্পনাও করতে পারেনি। (পারসোনাল মত)
যা এক্সপেকটেশন ছিল তার থেকে হাজারগুন বেশি পেয়েছি। মুভির ক্যারেক্টার, ডায়ালগ, সাউন্ড, গল্প সব কিছু এত সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছে তা লিখে বুঝানো সম্ভব না।
পারকেজ থেকে চানমিয়া (চঞ্চল), কারো থেকে কেউ যেন কম নয়। সবাই নিজ নিজ ক্যারেক্টার এমন ভাবে প্লে করেছে যেন এটা কোন মুভি নয় এটা একটি বাস্তব জীবনের চিত্র দেখছি।
এই মুভি হলে গিয়ে না দেখলে অপরাধ হবে। অন্তত ৪-৫ বার না দেখলে এই মুভির নেশাই কাটবে না।
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ০৯
রিভিউ লিখেছেন- Gousul Alam Shaon
হাওয়া দেখে বের হলাম। আসলে কি বের হলাম?! গাড়িতে বসে আছি, আর মাথার মধ্যে হাওয়া ঘুড়ছে। মাথার মধ্যে নাগু, উরকেস, পারকেস, গুলতি, ইব্রা, চাঁন মাঝি- ঘুড়ছে। কি অদ্ভূত এক ঘোরের মধ্যে সুমন আমাদের নিয়ে গেলো। ভাবা যায় না!! বাংলা সিনেমায় নতুন গল্প, নতুন দিন ‘হাওয়া’।
‘চঞ্চল চৌধুরী’ তাঁর অভিনয় জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ অভিনয় ‘হাওয়া’ চলচ্চিত্রে করে ফেলেছেন; এই পর্যায়কে অতিক্রম করা তাঁর জন্যও হিমালয় অতিক্রম করার মত কষ্টসাধ্য হবে!
দুইকথা…
শিক্ষিত রুচিশীল দর্শক যদি এই চলচ্চিত্রটি দেখার জন্য সিনেমা হলে না ফেরে, তবে বুঝে নেবেন; হয় তাদের রুচিশীলতা পরিপক্ক নয়, অথবা বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের কোনো ভবিষ্যত নেই!
বিঃদ্রঃ
সম্ভবত এটি বাংলা ভাষায় “হাওয়া” চলচ্চিত্রের প্রথম রিভিউ!
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ১১
রিভিউ লিখেছেন- Pavel Islam
এমন একটা ছবি বানাতে দম লাগে।
চমৎকার টিমওয়ার্ক, সিনেমাটোগ্রাফি, সাউন্ড, কালার, নির্মাণ, অভিনয়, প্রচলিত মিথ, হাওয়া আর জলের এক অদ্ভুত মেটাফোর ‘হাওয়া’।
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ১২
রিভিউ লিখেছেন- রহমান মতি
জলপথে রহস্যের ‘হাওয়া’
**********************
একটা জলপথ। সমুদ্রের জলপথ। একটা বোট। মাছ ধরছে জেলেরা। অনেক আনন্দ। জলের ঢেউয়ে এগিয়ে চলেছে বোট। ঢেউ আছড়ে পড়ছে বোটের গায়ে। দেখতে লাগে ভালো।
হাওয়া। কিসের হাওয়া? একেবারে দুই রকমের হাওয়া। এক সামুদ্রিক হাওয়া দুই রহস্যের হাওয়া। একটা রহস্য শুরু হয়েছে। এর কিনারা কোথায়?
অন্য সব বোটে অনেক মাছ ধরা পড়ছে কিন্তু এ বোটে কেন ধরা পড়ছে না! তবে কী মাছেরা এ বোটের সাথে আড়ি পেতেছে নাকি অন্য কোনো কারণ আছে?
বোটের মধ্যে একটা নতুন হাওয়া লেগেছে। কোথাকার জল কোথায় গড়াচ্ছে কেউ বুঝতে পাচ্ছে না। একবার এই বিপদ তো ঐ বিপদ কিন্তু বিপদের কান্ডারি কে?
বোটের মালিকের মাথা গরম। একটা হেস্তনেস্ত করতেই হবে এবার। কিন্তু তাতে কি শাপে বর হবে নাকি শিরে সংক্রান্তি!
জলপথে কি প্রেম হয়? মানুষ যেহেতু বাস করে জলপথে প্রেম তো হতেই পারে। জল সাক্ষী, হাওয়া সাক্ষী, আকাশটা সাক্ষী কিন্তু প্রেমের ধরনটা কেমন! বলে দেবো? না, ছবি দেখে জানাই কি ভালো না!
সমুদ্রের জল জোয়ার-ভাটায় আচরণ করে থাকে। ভাটার পর জোয়ারের উত্তাল হাওয়া শুরু হলে যেমন ভয়ের কারণ থাকে বোটের ভেতরেও ভয়ের পরিবেশ আসতে থাকে। একটার পর একটা বদ হাওয়া, বোটের মালিকের ভাষায় ‘কালা জাদু’।
‘ভয় পাচ্ছিস?’ বোটের মালিকের কথায় বিপরীতে থাকা অভিনয়শিল্পীই কী ভয় পাচ্ছে, মনে তো হবে আপনিও ভয় পাচ্ছেন দর্শক। এই না হলে অভিনয়!
ছবির শেষটা কী ছিল মশাই? এ তো অলৌকিক হাওয়া। যা মাথায় আসবেই না কোনোভাবে সেই ঘটনা ঘটে গেল! যে হাস্যরসে ছবির অর্ধেকটাই মেতে থাকবে দর্শক শেষে এসে আচমকা ধাক্কায় নীরব করে দেবে। ছবির বাঁক তো এমনই হবার কথা।
গালি দেয় সবাই ছবিতে। আপত্তির কিছু নেই। যারা যেভাবে কথা বলে তারা তো সেভাবেই বলবে। ওটাই তাদের ভাষা।
অভিনয়! কেউ কারো কম না। কী চঞ্চল চৌধুরী, কী শরিফুল রাজ, কী নাজিফা তুষি, কী নাসির উদ্দিন, কী সোহেল মণ্ডল, কী সুমন আনোয়ার! সবাই নিজেদের জাত চেনাল। ছবি হয়ে গেল সম্মিলিত জাত অভিনয়ের।
ক্যামেরা! সূর্যরশ্মির সাথে সমুদ্রের জলের ওঠানামার তরঙ্গ, জোছনা রাতে সমুদ্রের কাব্যিকতা, জলের ভেতর তিমির অবগাহন সব খেলে বেড়াচ্ছে ছবি জুড়ে। আহা! যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা।
‘সাদা সাদা কালা কালা’ তো এখন জনগনের গান। ওটা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই।
মেজবাউর রহমান সুমন?
তিনি তো আরো আগেই এলে পারতেন চলচ্চিত্রে। এলেনই যখন চলচ্চিত্রের পালে নতুন হাওয়া নিয়েই এলেন। এ হাওয়া তার নিজস্ব।
চোখের শান্তি পেতে ‘হাওয়া’ দেখে ফেলুন তবে।
রেটিং – ৮.৫/১০
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ১৩
রিভিউ লিখেছেন- মাসুদ রানা রকিব
একটি সিনেমা মুক্তির পর তা দেখে না দেখে কিছু মানুষ নেগেটিভ কথাবার্তা বলে রিউমার ছড়াবে এটাই স্বাভাবিক। আবার সব সিনেমা সব দর্শকের ভালো লাগবে না এটাও সত্য। কিন্তু হাওয়া সিনেমা নিয়ে আজকে কারো কারো স্ট্যাটাস পড়ে মনে হচ্ছে তারা এই সিনেমার বিরুদ্ধে বলার মিশন নিয়েই ময়দানে নেমে গেছেন! তবে আমি বিশ্বাস করি যারা আসল সিনেমাপ্রেমী তারা হলে গিয়ে টিকিট কেটে পুরো সিনেমা অবশ্যই দেখবেন এসব আজাইরা কথায় কর্নপাত না করেই।
আমাদের বাংলা সিনেমার এই জোয়ার অব্যাহত থাকুক এটাই চাওয়া। জয় হোক বাংলা সিনেমার।
কিছু কিছু মানুষ হাওয়া মুভি রিভিউ এর সময় বলছেন এইটা সবার জন্য না।কেন ভাই সারাজীবন কেন এক চিরায়ত ফরমেট এ আমাদের পড়ে থাকতে হবে?নাচ গান মারামারি থাকলে সেটা সবার জন্য আর কেউ এই ফরম্যাট থেকে বের হয়ে ভিন্ন কিছু বানাইলে সেটা কিছু দর্শক এর জন্য এমন বলার কি দরকার।সময় আসছে এখন গন্ডি থেকে বের হয়ে ভিন্ন কিছু করার।এই সময় সবাইকে যাওয়ার জন্য বলেন। সময়ের সাথে রুচির পরিবর্তন আনতে হবে সবাইকে।
হাওয়ার জন্য শুভ কামনা।
প্রিয় পাঠক রিভিউগুলো ফেইসবুক পোস্ট ও বিভিন্ন সিনেমার গ্রুপ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ১৫
রিভিউ লিখেছেন- জলে ভাসা পদ্ম
হাওয়া দেখলাম।
‘আমার মতে হাওয়া গত ১০ বছরের শ্রেষ্ঠ সিনেমা’।
(ব্যাক্তিগত মতামত)
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ১৬
রিভিউ লিখেছেন- আবিদ হাসান জয়
★ নো স্পয়লার ★
“হাওয়া”- একটি সমুদ্র, একটি নৌকা, একজন চঞ্চল চৌধুরী আর কয়েকজন অভিনেতার গল্প!
হাওয়া নিয়ে বলতে গেলে প্রথমেই আসে এর সিনেমাটোগ্রাফি। কি দারূন সিনেমাটোগ্রাফি! একজন পরিচালক যখন ওপেন স্পেইসে শ্যুট করার সুযোগ পায় তখন স্বাভাবিকভাবেই সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্যগুলোই সিনেমায় তুলে ধরেন। হাওয়ার ব্যাপারটা অন্যরকম। ২ ঘন্টা ১০ মিনিটের সিনেমায় পুরোটা গল্পই বলা হয়েছে সাগরের মধ্যে একটি নৌকার উপর। সেক্ষেত্রে একই দৃশ্য বারবার দর্শকের মনে একঘেয়েমি নিয়ে আসতে পারাটা স্বাভাবিক। কিন্তু, গল্পের সিনেমাটোগ্রাফার কামরুল হাসান খসরু এই একঘেয়েমিটা আসতে দেয় নি। তার উপর তার দৃশ্যায়নে তৈরি হয়েছে আলাদা একটা থ্রিল!
‘এই দুনিয়ায় আমিও দুইবার মইরা গ্যাছিলাম। আমার লগের গুলা মইরা ভূত হইয়া গ্যাছে। আমি শুধু বাঁইচা গ্যাছি।’ – থ্রিলিং সিনেমাটোগ্রাফির সাথে হাওয়ার ডায়লগ গুলোও ছিল অসাধারণ! এই জায়গায় নাসিরুদ্দিন খান আবারও তার জাত বুঝিয়েছেন।
এক মাস আগে মুক্তিপ্রাপ্ত ট্রেইলারে দেখানো হয়- গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা ট্রলারে হুট করে ওঠে পড়ে এক তরুণী। তাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে রহস্য। সে দেবী নাকি ভূত! তার আবির্ভাবের পর মাছ কমে গেছে সমুদ্রে, মাঝিদের মাঝে শুরু হয় কোন্দল।
শেষ পর্যন্ত কি হয়? পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনের বড় পর্দায় এটা প্রথম কাজ হলেও দর্শককে আটকে রাখার জন্য উনি যথেষ্ট মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন।
যদিও এটা মেটাফোরিক গল্প তবুও ছবির দৃশ্যায়ন, চরিত্রগুলোর সংলাপ, উত্তাল সমুদ্র, ভয়ের আবহ সবমিলিয়ে এতে পাওয়া যাবে থ্রিলার চলচ্চিত্রের আমেজ।
চট্টগ্রামে ফার্স্ট ডে,ফার্স্ট শো দেখার জন্য সকাল ৯ টায় বাসা থেকে বের হই। গতকাল সুগন্ধা সিনেমা হলে ফোন দিয়ে জানতে পারি আজকের সাড়ে দশটা আর সাড়ে বারোটার শো এর টিকেট আছে৷ বাকি সব শো এর টিকেট অগ্রীম বিক্রি হয়ে গেছে!! ভাবা যায় ব্যাপারটা!
এ ‘হাওয়া’ দীর্ঘদিন বয়ে চলুক বাংলা চলচ্চিত্রে।
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ১৭
রিভিউ লিখেছেন- نواف ناطق
আলিফ লায়লা দেখা দর্শকদের আলিফ লায়লাই দেখা উচিত। কষ্ট করে হাওয়া ই কেন দেখা লাগবে। আর একটা কাজ সবার কাছে ভালো লাগবে না এটা স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে ফলাও করে নেগেটিভ ইম্প্রেশন জমাতে হবে এমন কথা নেই।
হাওয়া যথেষ্ট ভালো একটি সি্নেমা। এমন ভিজ্যুয়াল বাংলাদেশের সিনেমায় আগে দেখা যায়নাই।
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ১৮
রিভিউ লিখেছেন- Md Imran Hosen
মুভি রিভিউঃ- হাওয়া (২০২২)
আইএমডিবি রেটিংসঃ- ৯.৭/১০
পারসোনাল রেটিংসঃ- ৮/১০
*************নো স্পয়লার**************
২০২২সালে যতগুলো বাংলা সিনেমা রিলিজ হয়েছে নিঃসন্দেহে এটা সেগুলোর থেকে অনেক ভালো। সিমাটি এক শ্রেণির মানুষের কাছে মাস্টারপিস মনে হবে।তবে অনেকেরই আবার ভালো নাও লাগতে পারে।সিনেমায় গালিগালাজ আছে তাই কেউ পরিবার নিয়ে দেখতে যাইয়েন না।তবে বন্ধুদের নিয়ে ইনজয় করা যাবে।সিনেমাটোগ্রাফি,কালার গ্রেডিং,সবার অভিনয় খুব ভালো ছিলো।
সিনেমার প্রথম অংশে কমেডি ছিলো খুব হলের দর্শকরা সবাই হেসেছে এবং ক্যারেক্টার চিনাইছে ভালোভাবে।
সিনেমার দ্বিতীয় অংশে সাসপেন্স ছিলো আবার ইমোশনালও ছিলো।আবার একটু কমেডিও এড করেছে।
আর সিনেমার গান,বিজিএম নিয়ে কিছু বলব না করন গানের কারনেই সিনেমার হাইপ আজ এতো।
শেষে শুধু একটাই কথা বলব অনেক ভালো সিনেমা সবার দেখা উচিত।আর দ্বিতীয় সপ্তাহে যদি হলের সংখ্যা বাড়ে এবং ১মাস ধরে চলতে পারে তাহলে সিনেমাটি হিট হবে।
শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য ধন্যবাদ সবাইকে
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ১৯
রিভিউ লিখেছেন- অনিক চৌধুরী
এইমাত্র পুরো ছবিটা দেখে হল থেকে বেরুলাম। আমি মন্ত্রমুগ্ধ। হ্যাঁ আমাদের ছবি দেখে আমিই হতবিহ্বল। এ ছবি পৃথিবীর অভাষাভাষী, চলচ্চিত্রের অনুরাগীদের দেখা উচিত। আমাদের চলচ্চিত্রের নতুন ভাষা, প্রকাশের যেনো এক ইশারা এই ছবি। প্রত্যেকটি চরিত্র কি অনবদ্য ছিল তা না দেখলে বোঝা যায় না। সঙ্গীত আর শব্দ পুরো ছবির দ্যোতনাকে অন্যস্তরে নিয়ে গেছে। প্রিয় বন্ধুর Mejbaur Rahman Sumon তোকে আর তোর হাওয়ার সদস্যদের
অভিনন্দন
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ২০
রিভিউ লিখেছেন- Shahnaz Khushi
দেখলাম “হাওয়া”
মেজবাউর রহমান সুমন’কে কি বলা উচিত সেটা ভাবছি! এত অভাবনীয় আয়েজন! সেটা কিভাবে সাগরের বুকে করা সম্ভব হল সেটা এখনও মাথায় ঘোর লাগা!
চঞ্চল!! তুমি এত এত নিষ্ঠুর অভিনয়ও যে এত সহজে করতে পারো সেটা ভাবি নাই বন্ধু তুমি এত খারাপ
শরীফুল রাজ! কাল দেখেছি “পরান”।আজ “হাওয়া”! দুটোই ভিন্ন ভিন্ন রুপে! তোমার অভিনয় যোগ, আমাদের ইন্ডাষ্ট্রিকে সমৃদ্ধ করবে।
নাসির উদ্দিন খান! জাস্ট স্যালুট! সুমন আনোয়ার, সোহেল মন্ডল, পার্কিস (আসল নাম জানিনা) সুপার সে উপর সুপার।তুষি’র সাবলিল রহস্যময়তা খুব ভাল ছিল!
সাদা সাদা , কালা কালা,রং জমেছে সাদা কালা…………….
মাদক এবং কু-সংস্কার/অন্ধত্ব দুর হোক। আমাদের সিনেমা হল গুলো কানায় কানায় পূর্ন হোক।সুস্থ সিনেমা দেখে সবাই ঘরে ফিরে গল্প করুক,-আর কি কি হতে পারতো!
হাওয়া”র পুরো টীমের জন্য ভালবাসা।
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ২১
রিভিউ লিখেছেন- Rumman Rashid Khan
‘হাওয়া’ দর্শন শেষে উপলব্ধি :
* মাঝ সমুদ্রে বাংলাদেশের জন্য আস্ত একটি সিনেমা নির্মাণের সাহস করার জন্য পুরো টিম স্মরণীয় হয়ে থাকবে অনেকদিন। এ ধরনের সিনেমাকে ব্যাকিং করার জন্য প্রযোজক সান মিউজক এন্ড মোশন পিকচার্স লিমিটেড’কে বিশেষ ধন্যবাদ।
* এমন সিনেমা বাংলাদেশে এর আগে হয়নি।
* সিনেমা দেখা শেষ করে একটা ঘোর কাজ করবে। মনে হবে এতক্ষণ সেন্ট মার্টিনে ছিলাম। পানির ওপর ছিলাম।
* ‘হাওয়া’ যতটা না সিনেমা, তার চেয়ে বেশি sheer poetry on motion. চলন্ত কবিতা। অধিকাংশ দৃশ্যের ফ্রেমিং, কালার, আলোর খেলা দেখে অস্ফুট স্বরেই বারবার বলে উঠেছি, Wow
* সিনেমার Background music গল্পকে প্রাণ দিয়েছে পূর্ণমাত্রায়। বার বার গর্ব হচ্ছিল, ‘হাওয়া’ আমাদের দেশের সিনেমা?
* অভিনয়শিল্পীরা এ সিনেমার অন্যতম প্রধান সম্পদ। সিনেমা দেখা শেষ করে কখনোই মনে হবেনা এতক্ষণ পর্দায় চঞ্চল চৌধুরী-শরীফুল রাজ-নাজিফা তুষিরা ছিলেন। প্রত্যেকে যেন চরিত্র হয়ে উঠেছিলেন। পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার সবার চরিত্রায়ণ এমনভাবে করেছেন, কেউ কারো চেয়ে কম নয়। চঞ্চল চৌধুরীকে দেখে বার বার মনে হচ্ছিল, এমন প্রতিভা হলিউড পেলে অস্কার পর্যন্ত নিয়ে যেতেন। শরীফুল রাজ আরেকবার ছক্কা পিটিয়েছেন। নাসির উদ্দিন খান, সোহেল মন্ডল, সুমন আনোয়ার, রিজভী রিজু প্রত্যেককেই সিনেমা দেখা শেষ করে ‘হাগ’ করতে ইচ্ছে হবে। আমার হয়েছে।
* পোশাক পরিকল্পনা, মেক আপ, সাউন্ড ডিজাইন, মিউজিক, সম্পাদনা-প্রতিটি বিভাগেই সবাই যে সর্বোচ্চ সততা দিয়ে কাজ করেছেন, তা পর্দায় ফুটে উঠেছে।
* সাদা সাদা কালা কালা-গানের তালে দর্শক, বিশেষ করে single screen audience নাচতে বাধ্য হবে। গানের placement যথাযথ।
* শেষ কথা: মেজবাউর রহমান সুমন ও team FACE CARD, take a bow. এমন cinematic experience সচরাচর প্রত্যক্ষ করার সৌভাগ্য হয়না। টিকেট কেটে আরো বেশ কয়েকবার বড় পর্দায় ‘হাওয়া’ দেখবো। এ ‘হাওয়া’ সবার জন্য সিনেমা। সব বয়সের, সব শ্রেণীর দর্শকের জন্য সিনেমা।
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ২২
রিভিউ লিখেছেন- Golam Morshed Simanto
হাওয়া শর্ট রিভিউ
সনি স্কয়ারে সিনেমাটি দেখলাম। চঞ্চল চৌধুরী, নাজিষা তুষি, শরিফুল রাজ, নাসির উদ্দিন খানের অভিনয় মুগ্ধ করেছে। সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের ঘোরে আছি এখনও। কালার গ্রেডিং মুগ্ধ করবে যেকোনো শ্রেণির দর্শককে। সিনেমাটোগ্রাফি এককথায় অনবদ্য। মাথায় গেঁথে আছে কিছু ফ্রেম। মনে হচ্ছিল যদি কিছু সিন স্ক্রিনশট নিয়ে রাখতে পারতাম। সিনেমার গল্পটা যেহেতু একটা মিথকে কেন্দ্র করে সেহেতু অনেকেরই প্লটটা ধরতে সময় লাগতে পারে। ‘হাওয়া’ জনমানুষের সিনেমা হয়ে ওঠার ফলে ম্যাস পিপল সিনেমাটা দেখছে। সিনেমাটা উপভোগ করার পর অনেক দর্শকের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হতে পারে। সিনেমার এন্ডিং এ যদি মেঘদলের ‘এ হাওয়া’ ব্যাকগ্রাউন্ডে লাগিয়ে দেওয়া যেতো তবে হৃদয়টা আরও শীতল হয়ে উঠতো।
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ২৩
রিভিউ লিখেছেন- Jamshedul Alam
Movie: ‘হাওয়া’
গত দশকে বাংলা সিনেমার প্রতি দর্শকের যে অনাগ্রহটা ছিলো, সেই জড়তার বাধঁ সম্ভবত একটু হলেও ভেঙেছে। সিনেমাবোদ্ধা থেকে দর্শক, সেলিব্রেটি থেকে সাধারণ মানুষ সবাইকে এভাবে একটা সিনেমার গান নিয়ে মেতে উঠতে শেষ কবে দেখেছি , তা মনে করতে পারিনা। একটা সিনেমার গান যখন হাওয়ার বেগে ছড়িয়ে পড়ে। সবার নজর কাড়ে। সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে যায়। তখন প্রত্যাশার পারদ কেবল উর্ধ্বগামীই হয়। হয়তো সেই প্রত্যাশাটা সিনেমার মূল গল্পকেও ছাড়িয়ে যায়। মানুষ তার নিজ দোষগুণে আশাহত হয়।
“হাওয়া” সিনেমাটাও সেই প্রত্যাশার সাক্ষী। তীব্র আগ্রহ, খুব হৈচৈ এ সিনেমা নিয়ে। কিন্তু হাওয়ার স্বকীয়তা আছে, এর নিজস্ব একটা গল্প আছে যে কিনা কোনো কিছুকে তোয়াক্কা না করে তার নিজ আঙ্গিকে গল্পটা বলে গেছে। ধরুন, আপনি শৈশবে কোনো এক রাত্তিরে ভেবেছেন আপনার বৃদ্ধা দাদী আপনাকে খুব সুন্দর রূপকথার গল্প শোনাবে। তিনি গল্পটা বলেছেন। কিন্তু সেটা আপনার ধারণা বাইরের। সেই গল্পে ভয় ছিলো, রক্ত ছিলো, আক্রোশ ছিলো। যেটা আপনি মোটেই ভাবেননি। হয়তো আপনি ধাক্কা খাবেন, নিজ প্রত্যাশার এহেন পরিণতি দেখে। কিন্তু ঐ গল্পটাও তো সুন্দর ছিলো। ভয়ংকর সুন্দর। হাওয়ার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়।
হয়তো এটা সবাই-ই ভেবেই নিয়েছেন তাই বলার অপেক্ষা রাখেনা যে এই সিনেমার মেকিং, কালার গ্রেডিং, অভিনয়, ক্লাইম্যাক্স সবই টপ নচ ছিলো। কাউকেই মেনশন করে আলাদা বলা যায়না, সবাই-ই ভালো করেছেন যেমনটা আশা ছিলো। নাজিফা তুষি আর চঞ্চল চৌধুরী পুরো সিনেমার কেন্দ্রবিন্দু ছিলো। বাংলা সিনেমা হিসেবে “হাওয়া” অনেক দূর এগিয়ে গেছে। যারা প্রত্যাশার পারদ বহু উঁচুতে নিয়ে গেছে তাদের কাছেও এটা ঠিকঠাক লাগবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি এটা নিয়ে ঠিক কতটা প্রত্যাশী? ঠিক কি চান আপনি এই সিনেমায়? প্রতিটি মুহুর্তে গল্পের মোড়, অনাকাঙ্ক্ষিত টুইস্ট কিংবা অভূতপূর্ব কোনো কাহিনী? তবে আপনি হয়তো আশাহত হবেন। আপনার কাছে এটা কেবলই একটা নৌকা, গোটা কয়েক জেলে ও তাদের আধভৌতিক সামুদ্রিক অভিজ্ঞতা লাগবে। আদতে কিন্তু তা নয়। হাওয়া বেশ ছিমছাম, গোছানো একটা গল্প। যেটা তার নিজ গতিতে এগিয়ে চলে। একটা সুন্দর সমাপ্তির মাধ্যমে শেষ। ব্যাস। আর কি চাই?
যদি এই সিনেমার বাজে দিক বলে কিছু থাকে, তবে সেটা, এক, আপনার রুচি- যেমন এই ধরনের সিনেমার আপনার পছন্দ না বা পছন্দ হয়নি।যা সম্পূর্ণ আপনার ব্যাক্তিগত ব্যাপার। দুই অধিক প্রত্যাশা।
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ২৪
রিভিউ লিখেছেন- Rony Khan
বসুন্ধরার সিনেপ্লেক্সে “হাওয়া”র প্রথম শো দেখলাম।
শুধু এটুকু বলবো টাকা জলে যাবেনা। নতুনত্ব অনেক কিছুই পাবেন। ফিনিশিং টা আইডিয়া করা কঠিন। বন্ধু বান্ধব নিয়ে দেখলে মজা পাবেন।সিঙ্গেল লোকেশন হওয়ার একটু একঘেয়েমি আসতে পারে যদি কেউ উরাধুরা নাচ-গান বা খুব একশান ভক্ত হয়। অভিনয় বা গল্প প্রেমিদের ভালো লাগার কথা। বাস্তবিক জেলে জীবন তুলে ধরতে কিছু গালি ব্যবহার করা হয়েছে যা সপরিবারে দেখতে যাওয়া অনেকের ভালো নাও লাগতে পারে।
সর্বোপরি এরকম নতুন গল্পের বাংলা সিনেমা এই ইন্ডাস্ট্রিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে খুব দরকার। বাংলা সিনেমার নতুন যুগের জন্য প্রার্থনা।
কিছু কিছু মুভি আছে প্রত্যেক দেশের ইন্ডাস্ট্রিতে যেগুলো সেই দেশের সিনেমার ধারা, প্রচলিত ফিল্মমেকিংয়ের ধারণাই বদলায়ে দেয়! যেমন ধরেন বলিউডের “দিল চাহতা হ্যায়”! ভারতের ইতিহাসে প্রথমবার কোন চটক, মাসালা ছাড়া পুরোপুরি রিয়েলিস্টিক আরবান এলিট ক্লাস তরুণদের লাইফস্টাইল তুলে ধরেছিলেন ফারহান আখতার। নতুন শতাব্দীর শুরুতে এই মুভি বলিউডকে বিশাল ধাক্কা দেয়! এরপর বলিউডে আরবান ইউথ বেইজড অনেক মুভি তৈরি হওয়া শুরু হয়! বা ধরেন “ডার্ক নাইট”! সুপারহিরো জনরার প্রচলিত ফর্মূলাই পাল্টায় ফেলছেন ক্রিস্টফার নোলান!
গত ৬-৭ বছর ধরে বাংলাদেশে বিভিন্ন জনরার মুভি তৈরি হচ্ছে যা ডেফিনিটলি তার আগের এক দেড় দশকের তুলনায় বেশ মানসম্পন্ন। আয়নাবাজি, ঢাকা অ্যাটাক, দেবী, দহন, ন’ডরাই, শান, পরান… এগুলো সবই ভালো মুভি, ভালো চেষ্টা, এনজয়েবল! বাট ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটা “হায়ার স্ট্যান্ডার্ড” তৈরি করবে, বাংলাদেশের মুভি মেকিংয়ের কনসেপ্টটাকে নেক্সট লেভেলটায় নিয়ে যাবে এমন মুভি অন্তত আমি পাচ্ছিলাম না! কিছু না কিছু অপূর্ণতা থেকে যাচ্ছিল!
অবশেষে আজকে ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শোতে “হাওয়া” দেখার পর আমার মনে হয়েছে, বাংলাদেশী মুভি ইন্ডাস্ট্রি হয়তো ফাইনালি সেরকম কিছু একটা পেল!
না, “হাওয়া” কোন কঠিন সামাজিক মেসেজওয়ালা, এক্কেরে প্রচলিত ট্যাবু ধ্যান-ধারণা ভেঙ্গেচুড়ে উল্টায়ে ফেলে দেওয়া কোন গুরুগম্ভীর গল্পের মুভি না! আবার ম্যাস লেভেলের জন্য অনেক চটকদার মাসালা এলিমেন্ট ও এই মুভিতে নাই! হাওয়ার কাহিনী খুব সিম্পল… বঙ্গোপসাগরের বুকে একটা জেলেনৌকায় কয়েকজন জেলের নিত্যকার ডায়নামিকস। তবে তাদের মাঝে একদিন উপস্থিত হয় রহস্যময়ী এক যুবতী, এরপর থেকেই ঘটতে থাকে অদ্ভুত অদ্ভুত সব ঘটনা। কি ঘটনা, কেন ঘটছে, কে ঘটাচ্ছে, কিভাবে ঘটছে এবং শেষপর্যন্ত কোথাকার হাওয়া কোথায় গিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে- এটাই “হাওয়া” মুভির মূল উপজীব্য!
তবে এই সিম্পল গল্পটাই ক্যামেরার পেছনে মেজবাউর রহমান সুমনের ডিরেকশন, কামরুল এইচ খসরুর সিনেমাটোগ্রাফি, আর ক্যামেরার সামনে চঞ্চল-রাজ-টুশি-সোহেল-সুমন আনোয়ার-নাসিরউদ্দিন খানদের অনবদ্য অভিনয়ের সমন্বয়ে হয়ে দাঁড়ালো “গর্জিয়াস”! আমাকে এক্সপিরিয়েন্স করালো- যাকে হয়তো “মাস্টারপীস” বললে কম বলা হয়, বলতে হয়- “পীক এক্সেলেন্স অব ফিল্ম মেকিং”! গল্পের পেইস, থ্রিল, সিনেমাটোগ্রাফি, ডায়লগস, আবহ সঙ্গীত, স্ক্রিনপ্লে আর অভিনয় মিলিয়ে এতো “ফুলফিলিং” মুভি আমি বাংলাদেশে আর আগে পাইনি। একেবারে পেট ভরে তৃপ্তি করে খাওয়া যাকে বলে!
বাংলাদেশের সমুদ্র অথেনটিক সৌন্দর্য আর সেই সমুদ্রে মাছ ধরে জীবকা নির্বাহ করা জেলেদের অথেনটিক জীবনযাত্রা- দুটা জিনিস একেবারে ১০০% পারফেক্টলি এই মুভিতে তুলে ধরেছেন পরিচালক সুমন। এর উপর একের পর এক চড়িয়েছেন রহস্য, কৌতুক, ইমোশন, পরবাস্তবতা, থ্রিলের দুর্দান্ত সব লেয়ার! শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গল্প কোথাও ঝুলে যায়নি, কোন সিকুয়েন্সেই বিরক্ত লাগেনি! এবং প্রতিটা ক্যারেক্টারকে নিজেদের অভিনয় স্কিল শো করার পূর্ণ স্পেসটা প্রভাইড করার ক্রেডিটটাও পরিচালক সুমনের প্রাপ্য, যেটা করতে দেশের অনেক বড় বড় ডিরেক্টর ভুলে যান!
এবার আসি অভিনয় প্রসঙ্গে। আসলে এই প্রসঙ্গটায় সবার শেষে আসলাম কারণ এই প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতে শুরু করলে ফুরাবে না! লীড-সাইড সব চরিত্রের অভিনেতাদেরই অভিনয় এতো অনবদ্য ছিল যে… কাকে ছেড়ে কার কথা বলবো আর কতোটুকুই বা বলব? এক এক করে প্রত্যেককে নিয়ে কিছু বলি-
১/চঞ্চল চৌধুরী- এই লোকটাকে নিয়ে তো নতুন করে কিছু বলার ভাষা নেই। চাঁন মাঝি চরিত্রের প্রতিটা দিক ফুটিয়ে তুলতে তিনি একেবারে নিজের অভিনয়প্রতিভার সবটা উজাড় করে দিয়েছেন। এটা তার ক্যারিয়ারের বেস্ট দুই তিনটা কাজের মধ্যে একটা হয়ে থাকবে অনেক দিন পর্যন্ত!
২/ নাজিফা টুশি- “সিন্ডিকেট” বা “নেটওয়ার্কের বাইরে” দেখার পর অনেকেই বলতেছিল টুশি নাকি শুধুই একজন “সে*ক্স সিম্বল” যাকে একটা রোলেই মানায়, দৈহিক সৌন্দর্য দেখানো চরিত্রহীনা নারী! আমি তাদের বলতে চাই, প্লিজ হাওয়া দেখেন! দৈহিক সৌন্দর্য বা সেক্সিনেসের সবটা দেখিয়েও যে কতো অনবদ্য অভিনয় করা যায় তা টুশি একেবারে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছেন! এই মেয়ে যদি “সে*ক্স সিম্বল” হয় তাহলে আসলে আমাদের আরো এমন আরো ১০টা সেক্স সিম্বল দরকার!
৩/ শরীফুল রাজ- “পরান” সিনেমায় রোমান হিসেবে সদ্যই দেশ কাঁপিয়েছেন “পরীমণির জামাই” ! তবে আমার পরান দেখে মনে হয়েছিল, রাজ অভিনয় “দেখানো”র স্পেসটা ঐ মুভিতে কম পেয়েছিলেন। সোয়্যাগ আর হিরোগিরি দেখিয়েছেন তবে মিমের তুলনায় রাজের “স্ক্রিন প্রেজেন্স” পরানে কম ছিল! আমার সেই অপূর্ণতাটা “হাওয়া”য় পূর্ণ করে দিয়েছেন রাজ! তিনি যে কতো ভালো একজন “অভিনেতা”, এন্ড অভিনয়প্রতিভা দেখানোর সুযোগ পেলে কি করতে পারেন সেটা হাওয়ায় দেখিয়েছেন তিনি! ইন্ডাস্ট্রিতে এখন অনেক “হিরো” আছে। বাট “অভিনেতা” হিরো খুব কম! রাজ এই দিক দিয়ে সবার থেকে এগিয়ে!
এছাড়াও “ভাইসা” খ্যাত সোহেল মন্ডল, দুই জ্যেষ্ঠ অভিনেতা সুমন আনোয়ার আর নাসিরউদ্দিন খান নিজ নিজ চরিত্রের ব্যপ্তি অনুযায়ী অসাধারণ অভিনয় করেছেন! বিশেষ করে সুমন ও নাসিরের কথা বলতে হয়। এনারা এতো দ্রুত অভিনেতাদের কাতারে এতো সামনে চলে আসবেন আমি কল্পনাই করিনি। বাংলাদেশের নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকি যদি কাউকে বলতে হয়, এই দুইজনের একজনকেই বলতে হবে!
স্টোরিটেলিংয়ে চার চাঁদ লাগিয়েছে কামরুল এইচ খসরুর সিনেমাটোগ্রাফি! শুধু ঝকঝকে দৃশ্য বা এস্থেটিক ক্যামেরা এঙ্গেল না, একেবারে তাক লাগানো ইম্পসিবল কিছু শটও এতো পারফেক্টলি নিয়েছেন খসরু, সম্ভবত এই মুভির জন্য সেরা চিত্রগ্রাহকের সব পুরষ্কার তিনি এবার ঝুলিতে ভরবেন।
****
সবশেষে একটা কথাই বলব… সবার দেখার দৃষ্টিভঙ্গি এক না! একই সিনেমা কারো “মাস্টারপীস” লাগবে, অনেকের কাছে হয়তো মনে হবে “জমলো না”! এটা যার যার টেস্ট… তবে পিওর ফিল্মমেকিং এস্থেটিকসের পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে বললে হাওয়ার মতো কাজ অন্তত এই ভূখন্ডের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে আর হয়নি! যে হাইপটা মুক্তির আগে হাওয়া নিয়ে উঠেছিল তা একেবারে সুদে আসলে ফেরত পেয়েছি সিনেমা শেষে!
আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি- “হাওয়া” যে স্ট্যান্ডার্ডটা সেট করলো, বাংলাদেশের বাকি ফিল্মমেকাররা যদি এখন এই স্ট্যান্ডার্ড ম্যাচ করতে চেষ্টা করেন, তাহলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রি মালয়ালাম ইন্ডাস্ট্রির মত সুনির্মিত, সুখাদ্য সব আর্টিস্টিক ব্রিলিয়ান্সে ভরে যাবে!
হাওয়া বাংলাদেশের সিনেমায় নতুনের হাওয়া লাগাক!
রেটিং- ১০/১০
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ২৬
রিভিউ লিখেছে- আদনান আল রাজিব
Hawa – হাওয়া is an EXPERIENCE, it’s a TRIP to the space we’ve never seen before
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ২৭
রিভিউ লিখেছে- তিশা
আজ “হাওয়া ” দেখলাম।
শুধু একটা কথাই বলতে চাই, বর্তমানের কথিত সুপারস্টারদের যতসব আজগবি সিনেমার ভিরে “হাওয়া ” এক খাটি নির্মান। সকলের অভিনয় ভালো ছিল। ” সাদা- কালা” গানে কি নাচরে ভাই যেমনটা হত সালমান – শাবনূর বা রিয়াজ – শাবনূরদের গানে। অনেকদিন পর ঐরকম আমেজ পেলাম।
” পরাণ” এর পর ” হাওয়া” এর যে চাহিদা, মনে হচ্ছে এভাবেই আমাদের সিনেমার দিন বদলে যাচ্ছে। শুধু ভাল গল্প, ভাল আর্টিস্ট এবং ভাল ডিরেক্টর দরকার।
বাংলা চলচ্চিত্রের এ দুর্দিনের কথা চিন্তা করে হলেও সবাই ” পরাণ” এবং ” হাওয়া ” দেখুন।
বাংলা চলচ্চিত্রের জয় হোক
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ২৮
রিভিউ লিখেছে- Labib Inkiad
___________________হাওয়া__________________
________________নো স্পয়লার________________
গল্প শুরু হয় একদল জেলের প্রাত্যহিক জীবনের ঘটনা নিয়ে। হঠাৎ একদিন তাদের নৌকায় উঠে আসে রহস্যময়ী এক নারী। যার আগমনের পরপরই বেশকিছু অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে থাকে। যা নিয়েই ফিল্মের কাহিনী সামনে এগোতে থাকে।
ফার্স্ট হাফ ছিলো কিছুটা স্লো কিন্তু সেকেন্ড হাফ ছিলো দারুণ এনগেজিং!
অভিনয় প্রসঙ্গে কথা বললে চঞ্চল চৌধুরী নিজেকে একদম ভেঙে উপস্থাপন করেছেন। এখন আর আয়নাবাজি, দেবী, তাকদীর এসবের সাথে চৌধুরী সাহেবকে তুলনা করার দরকার হবে না। কারণ তুলনায় সবার আগে এগিয়ে থাকবে ❝হাওয়া❞….ভয় পাচ্ছিস!!!
এরপর নাজিফা তুষি এবং শরীফুল রাজের অভিনয় বেশ ইমপ্রেসিভ ছিলো। আমি এই দুইজনের মধ্যে কোনো তুলনা করতে পারছি না। মাঝেমধ্যে মনে হয়েছে শরীফুল রাজ এগিয়ে যাচ্ছেন তো আবার পরক্ষণেই মনে হয়েছে এই বুঝি চোখের চাহনি দিয়ে নাজিফা তুষি সবকিছু গ্রাস করে দিবে!!!
এছাড়াও সোহেল মন্ডল, নাসিরউদ্দিন খান, সুমন আনোয়ার তাদের নিজেদের জায়গা থেকে সেরাটা দিয়েছেন।
__________________________________________
কালার গ্রেডিং, ডায়ালগ ডেলিভারি, ভয়েস মিক্সিং সবকিছু ছিলো দারুণ। ফিল্ম দেখে বোঝার উপায় নেই যে এটা বাংলাদেশের কোনো ফিল্ম!
যেহেতু জেলে সম্প্রদায়ের প্রেক্ষাপটে বানানো ফিল্ম সেহেতু প্রচুর গালাগালি রয়েছে। নিজ দায়িত্বে ম্যানেজ করবেন।
__________________________________________
এবার ফাইনাল কিছু কথা বলি, পুরো ফিল্মটা হচ্ছে মূলত অফট্রাকের একটি সিনেমা। সুতরাং সবার যে ভালো লাগবে এমন নয়, কিন্তু আপনি কাহিনী ধরতে পারলে গল্পের সাথে একদম মিশে যাবেন।
এইধরনের সিনেমা কিংবা এই কনসেপ্টের ফিল্ম এর আগে কখনো বাংলাদেশে হয়েছে বলে মনে হয় না আমার। সুতরাং এই ফিল্মটা যদি ফ্লপ হয়, তবে ধরে নিতে হবে বাংলা চলচিত্রের আর কোনোই ভবিষ্যৎ নেই।
__________________________________________
রেটিং : ০৯/১০
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ২৯
রিভিউ লিখেছে- Purnata
ভাইবোন একসাথে সিনেমা দেখার পর থেকে এখনও হাওয়া থেকে বের হতে পারিনি।এত সুন্দর সাবলীল ও সুদৃশ্য সিনেমা Hawa – হাওয়া!
বাংলাদেশে এর আগে ভিজ্যুয়াল নির্ভর এত সুন্দর সিনেমা হয়েছে কিনা জানা নেই। এই সিনেমাকে মাস্টারপিস বললেও ভুল হবেনা।
মেজবাউর রহমান সুন্দর এত সুন্দর করে বানিয়েছেন। চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরীফুল রাজ, নাসির উদ্দীন খান সবাই দারুণ অভিনয় করেছেন। হাওয়া সিনেমার জন্য শুভকামনা।
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ৩০
রিভিউ লিখেছে- Ariful Islam
HAWA MOVIE REVIEW
NO SPOILER, NO SPOILER
“হাওয়া” একটা সাধারণ গল্পের অসাধারণ হয়ে ওঠার গল্প, একটা অঞ্চলের গল্প, জড়ের গল্প। “হাওয়া” কিছু মানুষের সাধনা, ধৈর্য্য আর ত্যাগের গল্প।
হাওয়া এমন একটা বাংলা সিনেমা যা দর্শকের মস্তিষ্কে আগামী কয়েকযুগ পর্যন্ত বসে থাকবে।
গল্পঃ গল্পটা একদম সাধারণ। গল্পের ব্যপারে কিছুটা বলতে গেলেও স্পয়লার হয়ে যাবে। একটা মাছ ধরার বোট এ জেলেদের জালে একটা মেয়ে উঠে আসে। মেয়েটাকে ঘিরে আছে এমন এক রহস্য যা আস্তে আস্তে সেই বোটে থাকা প্রতিটা মানুষের জন্য বিভীষিকার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কী এমন রহস্য? কে সেই মেয়ে? কী চায় সে?
পটভূমিঃ বাংলাদেশে এই প্রথম কোন সিনেমা যা একদম মাঝ সমুদ্রের মাঝে তৈরি হয়েছে। কোন রকম সিজি বাঁ ভিএফএক্স এর ব্যবহার হয়নি এতে। তবে হ্যাঁ কিছু জায়গায় অবিশ্বাস্য লেছে। কিন্তু তুখোড় কারিগরির কারণে একদম মানিয়ে গেছে। একটা অঞ্চলের লোককথাকে সিনেমাটিক রূপ এর আগেও দেয়া হয়েছে। কিন্তু এইভাবে মাঝসমুদ্রে এইরকম আলাদা কিছুর জন্যেই হাওয়া বিশেষ হয়ে থাকবে।
সিনেমাটোগ্রাফিঃ চিত্রগ্রহণ কিছু জায়গায় এতো সুন্দর। কিছু ফ্রেম ধরা হয়েছে এতো টেকনিক্যালি এইরকম ফ্রেম ধরা সত্যিই আনএক্সপেক্টেড ছিল।বেশকিছু নতুন ফ্রেমের কাজ দেখলাম আজকে। সিনেমাটোগ্রাফির কারণে গুরুত্বপূর্ণ কিছু শট একদম রিয়ালিস্টিক লেগেছে।
কন্টিনিউটিঃ মনে হয়েছে প্রতিটা সিকুয়েন্স সিরিয়ালি করা হয়েছে। যার কারণে কন্টিনিউটি একদম পার্ফেক্ট ছিলো। কোন ল্যাকেজ ছিলোনা।
সাউন্ড, মিউজিক ও বিজিএমঃ সাউন্ড ক্রিস্টাল ক্লিয়ার। অনেক স্টুডিওতে ডাবিং করা ভয়েসের মতো লাগেনি। একদম র’ সাউন্ড ইফেক্ট। মিউজিক এর কথা আর কি বলবো। একটা গান আর সেই গান আর গান নেই একটা ব্র্যান্ড হয়ে গেছে। সেটা হলে বসে থেকেই টের পেয়েছি।
চিত্রনাট্য ও পরিচালনাঃ অনেকগুলো বছরের মেহনত আর নিজের ক্রিয়েটিভিটির সবটা উজার করে দেয়া হয়েছে। তবে চিত্রনাট্য একদম টাইট রাখা হয়েছে। আরও একটু ডিটেইলে গল্প বললে চায়ের কাপের শেষ চুমুকটার মতো হতো।
এডিট ও কালারঃ যত্নসহকারে কোথায় কীভাবে কালার ব্যালেন্স করতে হবে সেটা করা হয়েছে। একটুর জন্যেও কোথাও খাপছাড়া মনে হয়নি।
এবার আসি অভিনয়েঃ আসলে আমি না কোথাও চঞ্চল চৌধুরী, শরীফুল রাজ, নাসিরুদ্দিন খান সোহেল অথবা তুষিকে পাইনি। পেয়েছি সেই চরিত্রগুলোকে- চান মাঝি, ইবা, নাগু, উরকিস,পোরকেস, গুলতিকে পেয়েছি। আশা করি অভিনয় নিয়ে আর কিছু বলার নেই।
কমিকটাইমিং পার্ফেক্ট। জোর করে হাসাতে হয়নি, আমরা এমনিতেই অনেক হেসেছি। কমিকে নাসিরুদ্দিন খান ওরফে নাগু অনবদ্য।
প্রতিটা চরিত্র সমান স্ক্রীনটাইম পেয়েছে।
পরিশেষে, হাওয়া একটা সফল কাজ। একটা স্যাটিসফ্যাকশন, একটা প্রশান্তির আহা শব্দ। এক্সপেক্টেশন যেমনটা ছিলো ঠিক তেমনটাই পেয়েছি। না কম আর না বেশি। দুইঘন্টা আপনি থাকবেন একটা মাছধরা নৌকায় আর সেখানে নিজে এক্সপেরিয়েন্স করবেন সবকিছু যা যা ঘটবে।
বিঃদ্রঃ পোস্টার দেখে আমি বারবার বলছিলাম এটা কোন শেক্সপেরিয়ান প্লে এর মতো হয়েছে। মুভিটা দেখার সময় আমার কুবলা খান এর একটা বিখ্যাত কবিতার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিলো।
এক মিনিট ভাইবেন না এটা স্পয়লার, কারণ সব লোককথা একরকম হয়না, নিয়তি সবার একরকম হয়না।
পার্সোনাল রেটিংঃ ৪.৭৫/৫
.২৫ কম দেবার কারণ এই সিনেমার টাইট চিত্রনাট্য। বেশ কিছু ধোয়াশা রয়ে গেছে।
হাওয়া সিনেমার পাবলিক রিভিউ ৩১
রিভিউ লিখেছে- মেহেদী হাসান মুন
Hawa Short Review!
Hawa is one of the finest films coming from Bangladesh. Mejbaur Rahman Sumon crafted this film with effortless eloquence. Hawa is dark and gritty as well as humourous in parts. The story is mythical, metaphorical and simple. Greed, lechery, revenge are the main plot points for this film. All the actors did tremendous job in their respective roles. Chanchal, Nasir, Tushi outshined everyone. Hawa is not the film that everybody can connect. Many people will bash this film for no solid reasons at all. But Hawa should be remembered for many things.
Everyone (Specially the Actors and Actress) tremendously justify their characters. In Bangladesh film fraternity no one tried this type of experiment in the past. Before interval you can’t even imagine what’s waiting for you next. Every bit of moment you will have a new thrill and suspense! I had goosebumps on the finishing part. One thing I can guarantee, you will have a very good time. You can enjoy this movie with you family, friends, colleagues & beloved ones. If I was the producer then I offered #moneybackguarantee.
Note: I just shared my opinion, you may have your own point of view.
Hats off Chanchal Chowdhury, just have done his career best movie Undoubtedly
I am speechless totally, Mejbaur Rahman Shumon portrayed a story of ‘r***e’ so beautifully using the very raw and random daily lifestyles of the fisherman of the the south!!
Huge round of applause for Nazifa Tushi & Nasir Uddin Khan, Bangla movie just got a new standard, a must watch for all
সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। আপনার মতামত আমাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ, তাই কমেন্ট এর মাধ্যমে আপনার মতামত জানান। ধন্যবাদ।
প্রিয়জানালা’র প্রিয় পাঠকঃ বাংলা ব্লগ, তথ্য ও প্রযুক্তি, সাধারণ জ্ঞান, বিজ্ঞান, খেলাধুলা, পড়াশুনা, বিউটি টিপস, স্বাস্থ্য টিপস, সিনেমা রিভিউ, চাকরির গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলোর আপডেট পেতে এবং মতামত প্রকাশের জন্য আমাদের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ প্রিয়জানালা এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন।