BEAUTY TIPShealthtipstipsঅরফিয়াস নিজাম

আপেল সিডার ভিনেগারের ব্যবহার এবং গুনাবলি – Benefits of Apple Cider Vinegar

 আপেল সিডার ভিনেগারের পরিচয় ব্যবহার এবং গুনাবলি

আপেল সিডার ভিনেগারের ব্যবহার এবং গুনাবলি - Benefits of Apple Cider Vinegar
Benefits of Apple Cider Vinegar

 

বর্তমানে সবার পরিচিত এবং বেশ জনপ্রিয় একটি নাম আপেল সিডার ভিনেগার। স্বাস্থ্য সচেতনতা থেকে শুরু করে রুপচর্চাসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান আছে এই জাদুকরী ভিনেগারটিতে। সম্পুর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে  এবং প্রাকৃতিক ভাবে প্রস্তুত করা হয়। এর মূল উপাদান হচ্ছে আপেল। আপেল সিডার ভিনেগার মূলত আপেল এর রসের সাথে ইস্ট এবং ব্যাকটেরিয়া মিশ্রিত করে তৈরি করা হয়ে থাকে।স্বাস্থ্যকর বিভিন্ন ডায়েটে ডাক্তারা অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার রাখতে পরামর্শ দেন।ত্বকের   যত্ন এবং চুলের যত্নে আপেল সিডার ভিনেগার অত্যন্ত উপযোগী। আজকে আমারা আ্যপেল সিডার ভিনেগার এর গুনাবলি,ব্যবহার, উপকারী দিক,কিভাবে ঘরে তৈরি করতে হয়, সংরক্ষণ পদ্ধতি সম্পর্কে জানবো।

 

 

ওজন কমাতে আপেল সিডার ভিনেগারঃ

 

ওজন কমাতে এবং শারিরীক বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে আপেল সিডার ভিনেগার এর জুড়ি নেই।

 

১.অতিরিক্ত ওজন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত ওজনের ফলে শরীরে বিভিন্ন রোগ বালাই বাসা বাধে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরী। আ্যপেল সিডার ভিনেগার ওজন কমাতে এবং  নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্যে করে।

 

 

আপেল সিডার ভিনেগারের ব্যবহার এবং গুনাবলি - Benefits of Apple Cider Vinegar

 

২.নিয়মিত আপেল সিডার ভিনেগার গ্রহন হৃদ রোগের ঝুঁকি কমে এবং হৃদপিণ্ড সুস্থ থাকে।

 

৩.কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হজমশক্তি বাড়ায।

 

৪.অ্যাপেল সিডার ভিনিগার ব্লাড সুগার কমায়।

 

৫.উচ্চ রক্তচাপ দূরীকরণে অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার উপযুক্ত ভূমিকা পালন করে।

 

৬.শরীরের বিভিন্ন ব্যথা-বেদনা দূর করতে সাহায্য করে যেমন পা ব্যথা, মাথা ব্যথা, কোমর ব্যথা, সাইনাসের ব্যথা ইত্যাদি।

 

৭.আপেল সিডার ভিনেগার ক্ষুধা কমায়।

 

আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়মঃ

আপেল সিডার ভিনেগারের ব্যবহার এবং গুনাবলি - Benefits of Apple Cider Vinegar

 

 

আপেল সাইডার ভিনেগার খাওয়ার সময় অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। অন্যান্য খাবারের মত এটি খাওয়া যাবেনা। এটি খেতে হবে নিয়ম করে এবং পরিমাণ মত। দিনে ২ টেবিল চামচ এর বেশই আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়া যাবে না।খাবার খাওয়ার ১ঘন্টা আগে অথবা ১ ঘন্টা পরে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়া উচিত। রাতে ঘুমানোর প্রায় এক দেড় ঘন্টা আগে এটি খাওয়া যায়।  তবে ঘুমানোর ঠিক আগ মুহুর্তে খাওয়ার উচিত নয় বিশেষজ্ঞের পরামর্শে। এক গ্লাস পানিতে ২ টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করুন। এতে করে পেটের এবং শরীরের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হবে।

 

ঘরে তৈরি করুন আপেল সিডার ভিনেগার।

 

বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আপেল সিডার ভিনেগার থাকলেও আপনি খুব সহজে নিজেই তৈরি করতে পারেন এটি।

 

উপকরণঃ

 

১. ৩ টি লাল আপেল।

 

২. ১ কাপ পানি।

 

৩. ৩ টেবিল চামচ ব্রাউন সুগার/ চিনি।

 

৪. একটি খালি, পরিষ্কার, রোদে শুকনো বয়াম।

 

৫. শুকনো সুতির কাপড়। 

 

ঘরে তৈরি করুন আপেল সিডার ভিনেগার।

 

প্রস্তুতপ্রনালীঃ

 

     প্রথমে ৩টি আপেল ভালোভাবে ধুয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে নিন।

 

     তারপর এক কাপ পানিতে ৩ টেবিল চামচ ব্রাউন সুগার অথবা চিনি ভালো করে মিশিয়ে নিন।

 

     তারপর কেটে রাখা আপেলগুলো বয়ামের ভিতরে ঢুকিয়ে দিন। তবে বয়ামের মুখ পর্যন্ত যেন না ভরে যায়।

 

তারপর ব্রাউন সুগার অথবা চিনি মিশ্রিত পানিগুলো ঢেলে দিন বয়ামে।

 

     কাঠের চামচ দিয়ে ভালো করে নেড়ে দিন বয়ামের ভেতরটা।

 

     তারপর শুকনো সুতির কাপড় দিয়ে ঢেকে বয়ামের মুখ বন্ধ করে দিন।

 

     ৩ সপ্তাহের জন্য ঘরের অন্ধকার একটি কোনায় রেখে দিন।

 

     ২ দিন পর পর ঢাকনা খুলে চামচ দিয়ে নাড়া দিয়ে আবার ঢেকে রেখে দিন।

 

     ৩ সপ্তাহ পর আ্যপেল সিডার ভিনেগার ছেকে রেখে দিন।

 

ব্যাস, তৈরি হয়ে গেল আ্যাপেল সিডার ভিনেগার। উপরোক্ত পরিমান অনুযায়ী ২ সপ্তাহ ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করা যাবে।

 

ত্বকের যত্নে আপেল সিডার ভিনেগার।

 

ত্বকের যত্নে আপেল সিডার ভিনেগার এর জুড়ি নেই।ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে এর কার্যকরি ভূমিকা রয়েছে। চলুন জেনে নেই ত্বকের যত্নে আপেল সিডার ভিনেগারের উপকারিতাগুলো।

 

১. অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ত্বকের স্বাভাবিক পিএইচ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

 

২.ত্বকের বলিরেখা এবং রিংক্যালস  দূর করতে এটি সহায়ক।

 

৩.ত্বকের পোরস জনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এবং ওপেন পোরসগুলোকে ঢেকে দেয়। 

আপেল সিডার ভিনেগারের ব্যবহার এবং গুনাবলি - Benefits of Apple Cider Vinegar


৪.স্কিন এক্নে এবং এক্নের স্পট দূর করে।

 

৫. পিম্পাল এবং পিম্পাল তৈরি করে এমন ব্যাকটেরিয়ার সাথে লড়াই করে।

 

৬. পিম্পাল এর দাগসহ ত্বকের যেকোনো দাগ দূর করতে সক্ষম।

 

৭. ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়।

 

৮.ত্বকের যেকোনো ব্যাকটেরিয়াল সমস্যা সমাধানে অথবা ফাংগাল এক্নে/ইনফেকশন এ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

 

৯.ত্বকের মৃতকোষ দূর করতে সহায়ক।

 

আপেল সিডার ভিনেগার কিভাবে ব্যবহার করবেন?

 

আপেল সিডার ভিনেগার স্কিন টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।এতে করে আপনার ত্বকের মস্ক   পোরস এর সমস্যা থাকবে না।

 

     একটা পাত্রে তিন টেবিল চামচ পানির সাথে ১ টেবিল  চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে নিন।

 

     তারপর  একটি কন্টেইনার অথবা পরিষ্কার বোতলে ঢেলে ফ্রিজে রেখে দিন রেখে দিন।

 

তৈরি হয়ে গেল আপনার অ্যাপেল সিডার ভিনেগার স্কিন টোনার। প্রত্যেক বার মুখ ধোয়ার পর  তুলা দিয়ে টোনারটি মুখে লাগিয়ে নিন। ৫ মিনিট রেখে শুকিয়ে নিন। তারপর ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।

 

আপেল সিডার ভিনেগারের ব্যবহার এবং গুনাবলি - Benefits of Apple Cider Vinegar

 

বিভিন্ন ত্বক অনুযায়ী আপেল সিডার ভিনেগার এর ফেইস প্যাক।

 

ভিন্ন ভিন্ন ত্বক অনুযায়ী আ্যপেল সিডার ভিনেগার এর ফেইস প্যাক। যা ঘরে থাকা উপকরণ দিয়ে ঝটপট তৈরি করা যায়। 

 

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য আপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে ফেইস প্যাক।

 

উপকরনঃ

 

১.২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি।

 

২. ১ টেবিল চামচ আ্যপেল সিডার ভিনেগার।

 

৩. ১ টেবিল চামচ গোলাপজল।

 

সবগুলো  উপকরন একত্রে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। তারপর পরিষ্কার ত্বকে লাগিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

 

শুষ্ক ত্বকের জন্য আপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে ফেইস প্যাক।

 

উপকরনঃ

 

১. ১ চা চামচ মধু

 

২. ১ টেবিল চামচ বেসন।

 

৩. ১ টেবিল চামচ আ্যপেল সিডার ভিনেগার।

 

সবগুলো  উপকরন একত্রে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। তারপর পরিষ্কার ত্বকে লাগিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

 

স্বাভাবিক ত্বকের জন্য আপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে ফেইস প্যাক।

 

১. ১ টেবিল চামচ আলুর রস।

 

২. ২ চা চামচ মধু।

 

৩. ১ চা চামচ হলুদের গুড়ো।

 

৪. ১ টেবিল চামচ আ্যপেল সিডার ভিনেগার।

 

সবগুলো  উপকরন একত্রে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। তারপর পরিষ্কার ত্বকে লাগিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

 

চুলের যত্নে আপেল সিডার ভিনেগার 

 

চুলের যত্নে এবং চুলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য আপেল সিডার ভিনেগার অত্যন্ত কার্যকরি। মূলত মাথার ত্বক এর বিভিন্ন সমস্যা দূর করে এটি।

 

আপেল সিডার ভিনেগারের ব্যবহার এবং গুনাবলি - Benefits of Apple Cider Vinegar

 

১.চুলকে নরম এবং ঝলমলে করে।

 

২.খুশকি দূর করে এবং  চুল এর গোড়া পরিষ্কার করে।

 

৩. চুল ঝরে পরা কমায়।

 

৪. চুল এর স্বাভাবিক  পিএইচ এর মাত্রা নিয়ন্ত্রন করে।

 

চুল শ্যাম্পু করার আগে ১ টেবিল চামচ লেবুর রস এর সাথে ১ টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে নিন।  তারপর তুলা দিয়ে মাথায় ত্বকে লাগান। ৫ মিনিট মেসেজ করে ২০ মিনিট রেখে শাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।

 

সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহারে চুলের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হবে।

প্রিয়জানালায় আরো বিউটি টিপস সম্পর্কে জানুন 

           👉মধুর জাদুকরী গুনাগুণ! মধুর উপকারিতা

👉 বাথসল্ট কি? রূপচর্চায় Bath Salts এর উপকারিতা জেনে নিন   

👉বেসনের ফেস প্যাক – বেসনের উপকারিতা- বেসনের ব্যবহার 

           👉গরমে ত্বকের যত্নের জাদুকরী ৫ টি প্যাক  

            👉খুশকির কারন- খুশকির প্রতিকার ও ঔষধ

 

 

 

 

আমাদের প্রতিবেদনটি ভালো লাগলে লাইক ও শেয়ার করুন এবং অন্যদের জানার সুযোগ করে দিন । এছারাও কমেন্টের মাধ্যমে আপনার সুযোগ্য মতামত জানাতে ভুলবেন না ।

লেখিকাঃ  অরফিয়াস নিজাম (প্রিয়জানালা) 

 https://www.facebook.com/priyojanala

আমাদের ফেইসবুক পেইজ- প্রিয়জানালা

 

 

 

 

 

 

Back to top button