BEAUTY TIPS

ওপেন পোরস সমস্যার ১০০% সমাধান – Open Pores Tips

ওপেন পোরসের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ৬টি জাদুকরী টিপস!

ওপেন পোরস রমনীদের কাছে রীতিমতো আতঙ্কের বিষয়। সুন্দর মুখশ্রীতে যদি গোটা গোটা ছিদ্র দেখা যায় তবে তা মোটেই ভাল দেখায় না। তাছাড়া ওপেন পোরস বা মুখে লোমকূপের ছিদ্র বড় হলে তাতে ধুলাবালি, ত্বকের স্বাভাবিক তেল এবং মেকাপ সহজেই জমে যায় এবং সৃষ্টি করে ব্ল্যাকহেডস, ব্রণ, ফুঁসকুড়ি এবং র‍্যাশের মত সমস্যার। এইসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ওপেন পোরস মিনিমাইজ করা আবশ্যক। আজ আমরা ওপেন পোরস মিনিমাইজ করার ৫ টি জাদুকরী উপায় সম্পর্কে জানব। চলুন দেরী না করে জেনে নেওয়া যাক।

ওপেন পোরস সমস্যার ১০০% সমাধান - Open Pores Tips

১. নিয়মিত ক্লিনজিং এবং স্ক্রাবিং

ত্বকের ধরন যাই হোক, নিয়মিত পরিষ্কার রাখা আবশ্যক। অনেকেই নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার করেন না, মনে করেন যে বাড়িতে থাকলে তো ত্বকে ময়লা জমছে না। কিন্তু এটা ভুল ধারণা। ধুলাবালি সবখানেই বিরাজমান এবং বাড়িতে থাকলেও নিয়মিত প্রতিদিন দুইবার ভালো কোন ফেসওয়াস বা ক্লিনিং জেল দিয়ে মুখ ধুতে হবে। মুখ ধোওয়ার পর টাওয়েল দিয়ে হালকা চেপে মুখের পানি মুছে নিতে হবে, যাতে পুরো পানি না মুছে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এতে করে ত্বকে আদ্রতা বজায় থাকবে। এরপর ত্বক ভেজা থাকতেই ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। দেখবেন ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকবে এবং পোরসের আকারও সংকুচিত হয়ে আসবে। 

২.স্ক্রাবিং

ত্বকের যত্নের এই ধাপটি অনেকেই এড়িয়ে যান, কিন্তু এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। কারণ আমাদের ত্বক নিয়নিত পরিষ্কার করা হলেও ত্বকের ডেড সেলস, ব্ল্যাকহেডস, ইত্যাদি জমে লোমকূপের আকার স্ফীত হয়ে যায়। এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করা হলে ওপেন পোরসের সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য নিয়মিত সপ্তাহে দুদিন ভাল কোন স্ক্রাবার দিয়ে ৫-৭ মিনিট ত্বক স্ক্রাবিং করুন। চাইলে বেসন, মধু, টকদই এবং চালের গুড়া মিশিয়ে নিজেই বাড়িতে স্ক্রাবার তৈরি করে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে যদি কারো সেনসিটিভ স্কিন হয় তবে ৩-৪ মিনিটেও স্ক্রাবিং শেষ করতে পারেন। স্ক্রাবিং করার পর ত্বকে মধু দিতে পারেন অথবা ভাল কোন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এতে করে ত্বক শুষ্ক হবেনা, ময়লা, ডেডসেলস এবং ব্ল্যাকহেডস দূর হওয়ায় ওপেন পোরসের আকার সংকুচিত হয়ে আসবে। 

৩. আইসকিউব ব্যবহার 

ওপেন পোরসের সমস্যায় আইসকিউব ম্যাজিকের মত কাজ করে। এক্ষেত্রে আপনি সাধারণ পানি দিয়ে আইসকিউব তৈরি করতে পারেন অথবা এলোভেরা, মধু, শসার রস বা তরমুজের রস দিয়েও আইসকিউব তৈরি করতে পারেন। দিনের যেকোন একটি সময়ে মুখ ফেসওয়াশ  দিয়ে ধোওয়ার পর একটি কাপড়ে আইসকিউব পেচিয়ে মুখে আলতোভাবে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করতে পারেন। এতে ওপেন পোরস সাথেসাথেই সংকুচিত হয়ে আসে। মেকআপ করার আগেও এভাবে আইসকিউব রাব করতে পারেন এতে করে মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং পোরস বোঝা যায়না। আইসকিউব নিয়মিত ব্যবহারে পোরসের সমস্যা অনেকটাই কমে আসবে এবং ত্বকের তারুণ্য বৃদ্ধি পাবে। 

৪. টোনার ব্যবহার 

আমরা অনেকেই শুধুমাত্র ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়াকেই ত্বকের জন্য যথেষ্ট মনে করি। ফেসওয়াশে ত্বকের ময়লা দূর হলেও এটা ত্বকের লোমকূপের গোড়া আলগা করে দেয়। এজন্য ত্বক ঢিলেঢালা লাগে এবং পোরস আরও বেশী বোঝা যায়। এই সমস্যা দূর করতে পারে টোনার। মুখ ধোওয়ার পর ত্বকে টোনার ব্যবহার করলে তা ত্বকের লোমকূপ সংকুচিত করে, ত্বক টানটান রাখে। নিয়মিত টোনার ব্যবহার করলে ওপেন পোরসের সমস্যা কমে আসবে অনেকটাই। 

৫. সিরাম ব্যবহার

ত্বকের যত্নের অতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে সিরাম। এই উপাদানটি এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়, বিশেষ করে যাদের ত্বকে ওপেন পোরসের সমস্যা আছে।

ত্বকের ধরন অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন সিরাম। সিরামে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ত্বকের উজ্জ্বলতা ও সজীবতা বাড়িয়ে তোলে। এটা ব্যবহারের শুরুর দিন থেকেই উপকারিতা বোঝা যায়। ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোওয়ার পর টোনার ব্যবহার করুন। এর কিছুক্ষন পর সিরাম ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে, দাগ-ছোপ এবং ট্যান কমে যাবে। সেই সাথে পোরসের সমস্যাও কমে যাবে অনেকটাই।

৬. প্রচুর পানি ও ফলমূল খাওয়া

যতই স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করা হোকনা কেন, ত্বক যদি ভিতর থেকে সুস্থ এবং হাইড্রেট না থাকে তবে কোন স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টই ঠিকমত কাজ করবে না। তাই প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ লিটার পানি প্রতিদিন পান করতে হবে।সেইসাথে মৌসুমি ফলমূল এবং সবজী খেতে হবে, এতে করে ত্বক স্বাস্থ্যেজ্জ্বল ও ঝলমলে থাকবে। ত্বক হাইড্রেট থাকলে ওপেন পোরসের সমস্যাও কমে আসবে। 

শেষ কথা

ওপেন পোরসের সমস্যা বিভিন্ন কারনে দেখা দিতে পারে, যেমন বয়স বাড়লে, হরমোনের সমস্যায়, এলার্জিজনিত কারণে, ব্রণজনিত কারণে ইত্যাদি। একবার ওপেন পোরসের সমস্যা হলে তা পুরোপুরি ঠিক নাও হতে পারে। তবে উপরিউক্ত উপায়গুলো অনুসরন করলে এবং নিয়ম মেনে চললে ওপেন পোরসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকবে অনেকটাই। সুপ্রিয় পাঠক আশা করি আজকের আয়োজন আপনাদের ভাল লাগবে। আপনাদের মতামত কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। আজকের মত এখানেই শেষ করছি 

ধন্যবাদ সবাইকে। 

Back to top button