bangla newscurrent affairs

পদ্মা সেতুর টোল ও বিধিনিষেধ

 পদ্মা সেতুর টোল ও বিধিনিষেধ সম্পর্কে জানা উচিত সকলেরই!

গত ২৫ শে জুন শনিবার বেলা ১২ টায় বাংলাদেশের মানুষ সাক্ষী হল আরেকটি যুগান্তকারী শুভসূচনার। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সাথে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতকারী স্বপ্নের পদ্মা সেতুরউদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমার টাকায় আমার সেতু-দেশের টাকায় পদ্মা সেতু যা ছিল অকল্পনীয় তাই বাস্তবে রুপ নিয়েছে। এদিন সেতু উদ্বোধনে সারা দেশের মানুষ অংশ নিয়েছিলেন, তাদের উল্লসিত পদচারণায় মুখর ছিল সেতুপ্রাঙ্গন। পদ্মাসেতুতে পায়ে হেটে চলাচলে নিষেধ থাকলেও প্রথমদিন এই নিষেধাজ্ঞায় শিথিলতা ছিল। দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে পদ্মাসেতু ব্যাপক ভূমিকা রাখতে চলেছে। এখন দক্ষিণাঞ্চলের কলকারখানায় উৎপাদিত পণ্য বা কৃষিপণ্য অতি অল্প সময়ে ঢাকায় পৌঁছে যাবে। সেখান থেকে অতি অল্প সময়ে সারাদেশে পৌঁছানো সম্ভব হবে। 

পদ্মা সেতুর টোল ও বিধিনিষেধ
padma bridge toll rate

ইতিমধ্যে বরিশাল থেকে তিনঘন্টায় ঢাকা এবং যশোর থেকে চারঘন্টায় ঢাকায় পৌঁছানো যাচ্ছে। এই অভূতপূর্ব ব্যাপারে সবাই আনন্দিত। সম্প্রতি এক মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় দুজন নিহত হওয়ায় অর্নিদিষ্টকালের জন্য পদ্মাসেতুতে মোটরবাইক চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।তবে থেমে নেই বাইক চলাচল। বাইকাররা এখন ট্রাকে করে সেতু পারাপার করছেন। সেক্ষেত্রে একটি ট্রাকে ৮ টি বাইক উঠানো হচ্ছে এবং প্রতি বাইকের জন্য ৪০০ টাকা ভাড়া দিতে হচ্ছে। তবে যেহেতু বাইক চলাচল আপাতত নিষিদ্ধ তাই, পিকআপ বা ট্রাকে বাইক নিয়ে সেতু পারাপারও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে আশা করা যাচ্ছে কিছুদিনের মধ্যেই বাইক চলাচলের নিষেধাজ্ঞা বাতিল হবে।

পদ্মাসেতুতে টোলের পরিমাণ- Padma Setu Toll Rate

(১) পদ্মা সেতু পারাপারে মোটরবাইক ১০০ টাকা।

(২) বড় বাস ২,৪০০ টাকা ছোট বাস ১,৪০০ টাকা, মাঝারি বাস ২০০০ টাকা।

(৩) ছোট ট্রাকের জন্য (৫ টন পর্যন্ত) ১,৬০০ টাকা।

(৪) মাঝারি ট্রাক (৫ থেকে ৮ টন) ২,১০০ টাকা।

(৫) মাঝারি ট্রাক (৮ থেকে ১১ টন) ২,৮০০ টাকা।

(৬) বড় ট্রাক (তিন এক্সেল পর্যন্ত) ৫,৫০০ টাকা।

(৭) ট্রেইলারের জন্য ৬,০০০ টাকা। ৪ এক্সেলের পরে প্রতি এক্সেল ১৫০০ টাকা ।

(৮) কার ও জিপের জন্য ৭৫০ টাকা।

(৯) মাইক্রোবাস ১,৩০০ টাকা।

(১০) পিকআপের জন্য ১,৪০০ টাকা টোল দিতে হবে।

 

পদ্মা সেতুর টোল ও বিধিনিষেধ
পদ্মাসেতু টোল

সেতু থেকে প্রতিদিন যে পরিমান টোল আদায় হচ্ছে তাতে আগামী নয় বছরেই সেতুর ব্যয় উঠে আসবে। দেশীয় অর্থনীতিতে জিডিপি বাড়বে ১.২%। দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে ফলে এই অঞ্চলে কৃষি এবং শিল্পখাত আরও উন্নত হবে। গড়ে উঠবে নতুন কলকারখানা। আগে যেখানে ফেরী পারাপার হয়ে ঢাকা যেতে ৯-১০ ঘন্টা বা তার বেশী সময় লাগত সেখানে এখন মাত্র ৩-৪ ঘন্টায় ঢাকা পৌঁছানো যাচ্ছে। এত সময় সাশ্রয় হওয়ায় শুধুমাত্র দীর্ঘসময় লাগার কারণে যারা সহজে ঢাকামুখী ছিলেন না তারাও এখন সহজেই ঢাকা যেতে পারবেন। অনেক অসম্ভবই সম্ভব হবে শুধুমাত্র পদ্মাসেতুর কল্যাণে। ফেরীর টোলের চেয়ে পদ্মাসেতুর টোল বেশী হওয়ায় অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু সেতু নির্মাণের ব্যয় উঠাতে এবং একই সাথে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে টোলের পরিমাণ বেশী নির্ধারন করা হয়েছে।

এই সেতুর নিরাপত্তা ও স্থায়িত্বের কথা মাথায় রেখে বাংলাদেশ সরকারের সেতু দপ্তর থেকে বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হল। গত ২৩ জুন, বৃহস্পতিবার থেকে এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।

কী কী বলা হয়েছে এই বিজ্ঞপ্তিতে? দেখে নেওয়া যাক এক এক করে।

 পদ্মাসেতু ব্যবহারে বিধিনিষেধ

(১) এই সেতু পারাপার করার সময় গাড়ি থামানো যাবে না। গাড়ি থেকে নেমে সেতুর উপর দিয়ে হাঁটা বা ছবি তোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

(২) সেতুর উপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালানো যাবে।

(৩) পদ্মা সেতুর উপর যে কোনও ধরনের যানবাহন দাঁড়ানো নিষেধ।

(৪) তিন চাকাবিশিষ্ট যানবাহন (রিকশা,ভ্যান,সিএনজিচালিত অটোরিকশা ইত্যাদি) সেতুর উপর চালানো যাবে না।

(৫) গাড়ির দুপাশ দিয়ে যদি মাল বেরিয়ে থাকে, সেই গাড়ি সেতুতে ওঠানো যাবে না।

(৬) ৫.৭ মিটারের চেয়ে বেশি উচ্চতার পন্যবাহী যানবাহন সেতুর ওপর দিয়ে যেতে পারবে না।

(৭) সেতুর ওপরে কোনও ধরনের ময়লা ফেলা যাবে না।

(৮) পায়ে হেঁটে বা সাইকেল নিয়ে সেতু পারাপার করা যাবে না।

(৯) সেতুর উপর ছবি তোলাও যাবে না।

 তিনচাকার যেকোন বাহন এবং রিক্সা, ইজিবাইক, ট্যাক্সি, সাইকেল এবং বর্তমানে মোটরবাইকও পদ্মাসেতু পারাপার করতে পারবে না। কারণ এতে করে সেতুতে যানজট দেখা দেবে। উদ্বোধনের দিন থেকেই বহু উৎসুক মানুষ পদ্মাসেতু দেখার জন্য আসছেন বিধায় এখন সেতুর দুইপ্রান্তে যানজট দেখা যাচ্ছে। তবে কিছুদিন পরেই এই সমস্যার সমাধান ঘটবে আশা করা যায়।

সেতু থেকে প্রতিদিন যে পরিমান টোল আদায় হচ্ছে তাতে আগামী নয় বছরেই সেতুর ব্যয় উঠে আসবে। দেশীয় অর্থনীতিতে জিডিপি বাড়বে ১.২%। দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে ফলে এই অঞ্চলে কৃষি এবং শিল্পখাত আরও উন্নত হবে। গড়ে উঠবে নতুন কলকারখানা। আগে যেখানে ফেরী পারাপার হয়ে ঢাকা যেতে ৯-১০ ঘন্টা বা তার বেশী সময় লাগত সেখানে এখন মাত্র ৩-৪ ঘন্টায় ঢাকা পৌঁছানো যাচ্ছে। এত সময় সাশ্রয় হওয়ায় শুধুমাত্র দীর্ঘসময় লাগার কারণে যারা সহজে ঢাকামুখী ছিলেন না তারাও এখন সহজেই ঢাকা যেতে পারবেন। অনেক অসম্ভবই সম্ভব হবে শুধুমাত্র পদ্মাসেতুর কল্যাণে। ফেরীর টোলের চেয়ে পদ্মাসেতুর টোল বেশী হওয়ায় অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু সেতু নির্মাণের ব্যয় উঠাতে এবং একই সাথে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে টোলের পরিমাণ বেশী নির্ধারন করা হয়েছে।

পদ্মা সেতু সম্পর্কে আরো জানতে 

👉পদ্মা সেতু- আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতু- দক্ষিণের মানুষের ভাগ্য ঘুরবে? 

👉পদ্মা সেতু নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর

    প্রিয়জানালা’র প্রিয় পাঠকঃ বাংলা ব্লগ, তথ্য ও প্রযুক্তি, সাধারণ জ্ঞান, বিজ্ঞান, খেলাধুলা, পড়াশুনা, বিউটি টিপস, স্বাস্থ্য টিপস, সিনেমা রিভিউ,  চাকরির গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলোর আপডেট পেতে এবং মতামত প্রকাশের জন্য আমাদের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ প্রিয়জানালা এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন। 

Back to top button