জয়া আহসানের সিনেমা বিউটি সার্কাস- Beauty Circus
সম্প্রতি দূর্দান্ত ট্রেইলার রিলিজ হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমা “বিউটি সার্কাসের”।
ট্রেইলারে দেখা গেছে জয়া আহসানের আগুনঝরা পারফর্মেন্স৷
সিনেমাটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অনুদান প্রাপ্ত। ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত এবং বসুন্ধরা গুড়া মশলা নিবেদিত। কাহিনী, সংলাপ ও চিত্রনাট্য এবং পরিচালনা করেছেন মাহমুদ দিদার। সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান, তৌকির আহমেদ, ফেরদৌস আহমেদ, এবিএম সুমন, শতাব্দী ওয়াদুদ, হুমায়ুন সাধু প্রমুখ।
“এই গল্পটা শুধু আমার না” গল্পটা না বিউটির না সার্কাসের, জয়া আহসানের কন্ঠে কাহিনী সংক্ষেপ দিয়ে শুরু হয় ট্রেইলারটি। ট্রেইলারে বিউটির ছোটবেলা থেকে সার্কাসের জন্য নিজেকে তৈরি করা দিয়ে শুরু হয়। ট্রেইলারে আছে সার্কাস ও জাদু দেখানো বিউটির কৈশোর থেকে বেড়ে ওঠা, প্রেম, সংঘাত, লোভ, সার্কাস বন্ধে এক শ্রেনীর তৎপরতা, এক শ্রেণীর ভন্ড ধার্মিকদের প্রচারণা, নিষ্ঠুরতা আর প্রতিশোধের গল্প। ২ মিনিট ৮ সেকেন্ডের ট্রেইলারে ছিল গ্রাম বাংলার সার্কাস আর জাদুর ঝলক। ট্রেইলার দেখে মনেই হবে না আপনি সার্কাসের দৃশ্যগুলো পর্দায় দেখছেন। এ যেন চোখের সামনে দেখানো জাদুকরের জাদু, সার্কাসের দুর্ধর্ষ অনুশীলন। আবহমান গ্রাম বাংলার বিনোদনের মাধ্যমই ছিল সার্কাস, জাদুখেলা, পুতুল নাচ। সেই সার্কাসে বিউটির ছোট থেকে বড় হওয়া, যৌবনে প্রেমে পড়া, সার্কাস দেখানোর অপরাধে নির্যাতনের স্বীকার হওয়া, ষড়যন্ত্রের কবলে পড়া সবই অতি বাস্তবিকভাবে পর্দায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পর্দায় জয়া আহসানের উপস্থিতি ছিল জীবন্ত, ট্রেইলার দেখলেই বোঝা যায় প্রতিটি স্টেপ তিনি বাস্তবেই করেছেন। সার্কাস আর জাদু শিখতে কি পরিমান পরিশ্রম করেছেন যারা ট্রেইলার দেখেছেন সহজেই বুঝতে পারবেন।
“বিউটি সার্কাস” ট্রেইলারে সব অভিনেতাদের অভিনয়, সিনেমাটোগ্রাফি, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছিল অসাধারণ।২০১৭ সালে নওগাঁর সাপাহার ও মানিকগঞ্জে প্রায় ২০০ জন নির্মানসঙ্গী ও গ্রামবাসীদের অংশগ্রহণে সিনেমাটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। অনেক বৃহৎ পরিসরে সত্যিকার সার্কাস তাবুর নিচে সিনেমাটির শ্যুটিং করা হয়। ট্রেইলারে যে মেলা দেখানো হয়েছে সেটাও শ্যুটিং এর জন্য সত্যিকার মেলার আয়োজন করা হয়। এজন্যই ট্রেইলারে মনে হয়েছে এটা সত্যিকার সার্কাসেরই দৃশ্য। সিনেমাটি ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে অনুদান পেলেও
অনেক বৃহৎ পরিসরে কাজ হওয়ায় সিনেমাটির কাজ শেষ হতে অনেক বেশী সময় লেগেছে। ২০১৯ সালে মুক্তির কথা থাকলেও মহামারীর কারণে মুক্তিও পিছিয়ে যায়। অবশেষে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর সারা বাংলাদেশে শুভমুক্তি পেতে যাচ্ছে।
অভিনয় প্রসঙ্গে জয়া আহসান জানান- এই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য এমন অনেক অনুশীলন ও অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছে যা এর আগে কখনো হয়নি। চরিত্রের অভিনয়কে তিনি রোমাঞ্চকর বলে জানিয়েছেন। পর্দায় জয়া আহসানের সাবলীল সার্কাস ও জাদু প্রদর্শন দেখে মনে হবে উনি দীর্ঘদিন এ কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন, অথচ সার্কাস বা জাদু তাকে সিনেমার জন্যই শিখতে হয়েছে। অথচ পর্দায় কি নিখুঁত ছিল তার অভিনয়। প্রেম-ভালবাসা আর প্রতিশোধের নেশাও সিনেমায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ২ মিনিট ৮ সেকেন্ডের ট্রেইলারটি দেখে আপনার সিনেমাটি দেখার আগ্রহ আরো বেড়ে যাবে। আবহমান গ্রাম বাংলার সংস্কৃতি আর গ্রাম্য রাজনীতি আবারও আপনাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে আমাদের শিকড়ে।
সিনেমার ট্রেইলার রিলিজ হওয়ার পর দর্শকরা দারুণ সব মন্তব্য করেছেন ইউটিউব কমেন্ট সেকশনে। জয়াসহ অন্যান্যদের অভিনয় অথবা সিনেমার কাহিনী নিয়ে প্রশংসা করেছেন দর্শকরা। বাংলা সিনেমার সুদিন ফেরাতে নতুন আরেকটি সিনেমা যুক্ত হতে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন।
তবে রিলিজ হওয়া ট্রেইলারের ৫৫ সেকেন্ডের মাথায় দেখানো দাজ্জাল এর প্রতিকৃতিতে বিরুপ হয়েছেন অনেক দর্শক। সিনেমার কাহিনীতে পরিচালক কেন দৃশ্যটি রেখেছেন, এবং কেন একজন দাড়ি, টুপি পরিহিত দরবেশ ইলুমিনাতির চিহ্ন ব্যবহার করছেন তা নিয়ে ইউটিউব কমেন্ট সেকশনে ক্ষিপ্ত হয়েছেন দর্শকরা। সিনেমার এই দিকটি বাদ দেয়া হলে সিনেমাটি দর্শক ভালভাবেই গ্রহণ করেছে বলা যায়। তবে ইলুমিনাতি এবং দাজ্জালের এক চোখের সাইনের কারণে বয়কটের মুখোমুখি পড়তে হতে পারে সিনেমাটিকে। এ ব্যাপারে সিনেমা সংশ্লিষ্টদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় সরকারী অনুদানের এবং মানসম্মত সিনেমাটির প্রদর্শন নিয়ে যথেষ্ট সমস্যা হতে পারে।
তবে বাংলা সিনেমার সুদিন চলছে এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়। একের পর এক মানসম্মত কাহিনী এবং চিত্রায়ণ নিয়ে হাজির হচ্ছে বেশকিছু সিনেমা। এভাবে চলতে থাকলে দেশীয় সিনেমা দ্রুতই আবার আগের মতই দর্শক টানতে পারবে হলগুলোতে৷ বন্ধ থাকা হলগুলোও চালু হয়ে যাবে। সম্প্রতি “হাওয়া” এবং “পরাণ”
Beauty Circus Trailer | বিউটি সার্কাস ট্রেইলার
সিনেমা প্রদর্শনের জন্য বেশকিছু হল পুনরায় চালু করা হয়েছে। তবে সিনেমায় বিতর্কিত এবং ধর্মীয় অনুভূতির বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখলে তা সকল শ্রেণীর জন্যই মঙ্গল বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।