সাদিয়া আয়মানের চমকে সেরা ওয়েব ফিল্ম মায়াশালিক – Mayashalik Review
দর্শকদের মন জিতে নিয়েছে মায়াশালিক
এক মিষ্টি ভালোবাসার মায়ায় আচ্ছন্ন আমাদের চারপাশ। কিন্তু এই মায়ার আবেশের রহস্য কি? ভালোবাসার এই অদৃশ্য মায়ার অপেক্ষার পালা শেষে মুক্তি পেল শিহাব শাহীন পরিচালিত Binge অরিজিনাল ওয়েব ফিল্ম ‘মায়াশালিক’
ওয়েব ফিল্ম নামঃ মায়াশালিক
অভিনয় করেছেনঃ অপূর্ব এবং সাদিয়া আয়মান। এছাড়াও রয়েছেন শহীদুজ্জামান সেলিম, ইমতিয়াজ বর্ষণসহ আরও অনেকে।
মায়াশালিক ওয়েবফিল্ম রিভিউ
দেশীয় ওয়েব ফিল্মগুলো এখন দর্শক পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। নতুন ধরনের ওয়েব ফিল্ম নিয়ে আবারও আলোচনায় জনপ্রিয় নির্মাতা শিহাব শাহীন। অন্যরকম ভালোবাসার গল্প নিয়ে নির্মাণ করেছেন ওয়েবফিল্ম “মায়া শালিক”। ওয়েবফিল্মটির প্রধান চরিত্রে আছেন রোমান্টিক কিংখ্যাত জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও তরুন অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান। “ফুলের নামে নাম” খ্যাত তরুণ অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান ওয়েবফিল্মটিতে দূর্দান্ত অভিনয় করেছেন। দেশীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম “Binge” তে রিলিজ হয়েছে “মায়া শালিক” রিলিজের পর থেকেই দর্শকদের প্রশংসায় ভাসছে “মায়াশালিক”। ১ ঘন্টা ৫৩ মিনিটের ওয়েবফিল্মটিতে শারিরীক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতার লড়াই করা এক যুবকের ভালোবাসা ও কল্পনার শক্তি দেখানো হয়েছে। রং নাম্বারেও যে প্রেম হয় তা বেশ পুরোনো ব্যাপার হলেও দর্শক সেই আবেগ আবার নতুন করে উপভোগ করতে পারবেন। এটা ভালোবাসার গল্প হলেও এই ফিল্মের প্রতিটি ডায়ালগ আপনার হৃদয়ে গেথে যাবে। দুজন মানুষের ভালোলাগা, খুনসুটি, আবেগ, ঝগড়া সব মিলে যেন আমাদেরই গল্প এটা। পারিপার্শ্বিকতার চাপে ডিপ্রেশনে ভোগা ছেলেটাও তার মনের মানুষের কাছে নিজের কল্পনাকে কি সুন্দর ফুটিয়ে তোলে! ২০১০, ২০১৩, এবং ২০১৬ তিনটি সালকে তুলে ধরা হয়েছে নাটকটিতে। প্রশ্ন আসতে পারে দুটি মানুষ প্রেম করছে এই তো কাহিনী! না.. প্রেমের কাহিনী আছে অবশ্যই। তবে তার সাথে আছে টাইম ট্রাভেল। একজন প্রায় প্রতিবন্ধী মানুষের ভালোবাসার গল্পতো সোজা সরলভাবে চাইলেও আগাতে পারে না! তাহলে কি স্যাড এন্ডিং? সেটা বলে দিলে তো স্পয়লার হয়ে যাবে। সেটা বরং দর্শকদের জন্যই তোলা রইল।

সাদিয়া-আয়মান-মায়াশালিক
স্বয়ং নির্মাতার মুখেই শোনা যাক-মায়া শালিক সম্পর্কে শিহাব শাহীন জানিয়েছিলেন ” মায়াশালিক অন্যরকম এক প্রেমের গল্প। মায়াশালিকে ভালোবাসার চেয়েও বেশি কিছু দেখানো হবে। সংখ্যাতত্ত্ব তার উপর কি মানুষের সৌভাগ্য বা দূর্ভাগ্য জড়িত? অতীতের ঘটনার সাথে সাথে বর্তমান এবং ভবিষ্যতের ঘটনাও কি জড়িত? এমন অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে দেখতে পারেন মায়াশালিক ওয়েব ফিল্মটি। রোমান্স এবং কল্পনার মিশ্রনে এমন কাজ এর আগে বাংলাদেশে হয়নি বলে জানিয়েছেন নির্মাতা। অপূর্ব তার কমফোর্ট জোনে কাজটি করলেও তার চরিত্রটি সাদামাটা কোন প্রেমিকের চরিত্র ছিলনা। শারিরীক ও মানসিক লড়াই করার চরিত্রটি অপূর্ব অসম্ভব বাস্তবভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। সাদিয়া আয়মান অসম্ভব সুন্দর অভিনয় করেছেন। চঞ্চল, দুষ্টু-মিষ্টি চরিত্রে তাকে সবার কাছেই দারুন মনে হয়েছে। দর্শক রিভিউ, ইউটিউব কমেন্ট থেকে এমনটাই জানা গিয়েছে। ওয়েবফিল্মটি দর্শকরা ভীষন পছন্দ করেছেন। অভি এবং সারা দুজনের জুটির ওপর দর্শকদের এক বাড়তি ভালোলাগার সৃষ্টি হয়েছে। ওয়েবফিল্মের কাহিনীর বিন্যাস, চরিত্রগুলোর সাবলীল অভিনয় ফিল্মটি আরও সুন্দর করে তুলেছে। ফিল্মটির সিনেমাটোগ্রাফি, কালার গ্রেডিং, বিজিএমও দারুন ছিল। এককথায় দারুন উপভোগ্য একটি ওয়েবফিল্ম দেখা মিস করতে না চাইলে “Binge” এ দেখে নিতে পারেন ওয়েবফিল্ম মায়াশালিক। ১. ৫৩ ঘন্টা আপনি এক অন্যরকম ভালোলাগা আর টাইম ট্রাভেলের দুনিয়ায় থাকবেন। এরকম হারিয়ে যেতে মন্দ লাগবে না আশা করি।
মায়াশালিক ওয়েব ফিল্মের গানঃ
ওয়েব ফিল্মে রয়েছে ২টি মিষ্টি গান একটি গান গেয়েছে তাহসান ও অন্যটি গেয়েছেন অজন্তা রহমান।
কোথায় হয়েছে এই মায়াশালিক ওয়েব ফিল্মের শুটিং?
মায়াশালিক ওয়েব ফিল্মের শুটিং হয়েছে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় যেখানে একটা ইকো পার্ক আছে, ভেতরে চমৎকার একটি ঝর্ণাও যার কয়েকটি ঝলক দেখাও গেছে। তবে যেসব লোকেশনে মূলত এই ওয়েব ফিল্মের শুটিং হয়েছে, সেসব জায়গায় খুব বেশি মানুষের পা পড়েনি৷ মায়াশালিক এর কেন্দ্রস্থল যে বাড়িটি ছিল সেটি ইকোপার্কের ভেতরেই থাকা সরকারী একটি রেস্ট হাউজ। লেকের ওপর ঝুলন্ত একটা ব্রিজ পেরিয়ে যেতে হয় সেই রেস্ট হাউজে।

মায়াশালিক গল্প বিতর্কঃ
বাংলাদেশে বর্তমানে কোন কন্টেন্ট আসলেই দর্শকরা খুঁজে বেড়াতে থাকে এই কন্টেন্ট কোথা থেকে কপি বা অনুকরণ করা হয়েছে! মায়াশালিক ব্যতিক্রম নয় মুক্তি পাওয়া মাত্র বিভিন্ন দর্শক গল্পের মৌলিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ গল্পের সাথে কোরিয়ান কোন সিনেমার মিল পাচ্ছেন কেউ বা এনিমে মুভির সাথে মিল পাচ্ছেন এমন কি কেউ বা সাউথ ইন্ডিয়ান কোন সিনেমার সাথে মিল খুঁজে বেরাচ্ছেন। টাইম ট্রাভেল নিয়ে কন্টেন্ট নির্মানের ক্ষেত্রে অন্যসব টাইম ট্রাভেল সিনেমার সাথে মিল থাকা স্বাভাবিক , যদি মিল পুরোটাও থাকে শিহাব শাহীনের চেষ্টার ত্রুটি ছিল না। খুব সাধারণ গল্পকে অভিব্যক্তির মাধ্যমে টানা ২ ঘন্টা সার্থকভাবে টেনে নেয়াকে অবশ্যই সাধুবাদ জানানো দরকার।
সবশেষে ২০২২ সালের অন্যতম সেরা কন্টেন্ট হয়ে থাকবে মায়াশালিক।
মায়াশালিক ফ্রি দেখুন Binge
Mayashalik Free Download